অশোধিত তেলের পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে সোনার দামও চড়তে শুরু করেছে। ইরানে মার্কিন হামলার পর থেকেই প্রভাব পড়ে সোনার বাজারে। শনিবার কলকাতায় ১০ গ্রাম সোনা দাম একধাক্কায় বাড়ল সাড়ে ৮০০ টাকা। ৩ শতাংশ হারে জিএসটি যোগ করলে ৪১ হাজার টাকা ছাড়াবে ২৪ ক্যারেট ১০ গ্রাম সোনার দাম। এর আগে এত বেশি দামে কখনও সোনা বিকোয়নি কলকাতায়।
তবে শুধু ভারতের বাজারে নয়, সোনার দাম বেড়েছে বিশ্ব জুড়েই। আমেরিকার ড্রোন আক্রমণে ইরানের সেনা-কর্তার মৃত্যুকে ঘিরে রাজনৈতিক আবহাওয়া ঘোরালো হতেই এ দিন বিশ্ব বাজারে সোনার দাম এক লাফে ১ শতাংশেরও বেশি বেড়ে যায়। ইরান-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চাপান-উতর অব্যাহত থাকলে বাজার পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। শুক্রবার বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত হন ইরানের কাদ্স ফোর্সের জেনারেল কাসেম সোলেমানির। এরপরই কার্যত যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়। ইরান সরাসরি যুদ্ধের প্রসঙ্গ না তুললেও স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়ে সবরকম ভাবে প্রস্তুত রয়েছে তারাও।
তবে ইরানের পাশাপাশি সোনার দামবৃদ্ধির পিছনে আরও কিছু কারণ কাজ করছে বলে মনে করছেন অনেক বিশেষজ্ঞ। অল ইন্ডিয়া জেম অ্যান্ড জুয়েলারি ডোমেস্টিক কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান শঙ্কর সেন বলেন, ‘‘দেশে সোনার দাম বাড়ার অন্যতম প্রধান কারণ ডলারের ঊর্ধ্বমুখী দর। সোনা আমদানি করতে হয় ডলার দিয়ে। আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দামে হেরফের না-হলেও যদি ডলারের দাম বেড়ে যায়, তা হলে দেশে সোনার দাম বাড়ে। কারণ, সে ক্ষেত্রে একই পরিমাণ ডলারের জন্য আগের থেকে বেশি টাকা খরচ করতে হয়।’’
কিন্তু সোনার দাম কি এই হারে বাড়তেই থাকবে? সেটা কি বাড়তেই থাকবে? সোনা ব্যবসায়ী মহলের মতে, এই দাম বৃদ্ধির পিছনে কোনও ব্যবসায়িক কারণ নেই। ফলে আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি আর বেশি ঘোরালো না-হলে দাম ক’দিনের মধ্যেই কিছুটা কমবে। তবে ওই দাম কমাও সাময়িক হবে বলেই ধারণা স্বর্ণ ব্যবসায়ী মহলের। কারণ, ভারতের পাশাপাশি গোটা বিশ্বে আর্থিক সমস্যা চলছে। সাধারণ ভাবে দেখা গিয়েছে, আর্থিক ক্ষেত্রে সমস্যা বাড়লে লগ্নিকারীদের অনেকেই সোনাকে বিনিয়োগের নিরাপদ জায়গা হিসেবে বেছে নেন।