এ যেন মগের মুলুক! নিনের নাগরিকত্বের প্রমাণ দেবেন কী করে? এই চিন্তায় যখন আতঙ্কিত গোটা দেশবাসী, তখন বিজেপি সাংসদের এক সইতেই হওয়া যাচ্ছে ভারতের নাগরিক! হ্যাঁ, সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের সই করা অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের পরিচয়পত্র নিলেই নাকি মিলবে ভারতীয় নাগরিকত্ব – এমনই প্রচার চলছে বিজেপির তরফে। যা নিয়ে এবার সরব হলেন খোদ প্রাক্তন সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর।
প্রসঙ্গত, বিজেপির কারণে তাঁদের নাগরিকত্ব নিশ্চিত হতে চলেছে, মাসখানেক ধরেই মতুয়া মহলে এমন প্রচার চালাচ্ছে শান্তনু-শিবির। তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ, দলীয় সাংসদকে কাজে লাগিয়ে মতুয়া সমাজের সবটাই দখল করে নিতে চাইছে বিজেপি। আর তারই মনস্তাত্ত্বিক কৌশল এই পরিচয়পত্র। স্বাভাবিকভাবেই এই পরিচয় নেওয়ার জন্য মতুয়াদের মধ্যে হিড়িক পড়ে গিয়েছে। প্রতিদিনই লম্বা লাইন পড়ছে ঠাকুরনগরের ঠাকুর পরিবারে।
উল্লেখ্য, সেই পরিচয়পত্রটি আকার একেবারেই এটিএম কার্ডের ন্যায়। কার্ডের ওপরে লেখা, অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘ, কার্ড প্রাপকের নাম, কার্ড ইস্যুর তারিখ, আধার কার্ডের নম্বর ইত্যাদি। কার্ডের নীচের ডানদিকে শান্তনু ঠাকুরের সই। এই পরিচয়পত্র নিতে মতুয়া অনুগামীদের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছে। উত্তর থেকে দক্ষিণবঙ্গ, কলকাতা শহরতলি সব এলাকার মতুয়ারা দল বেঁধে ঠাকুরনগরে হাজির হচ্ছেন।
এই পরিচয়পত্র বিলির বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কানেও গিয়েছে। গত শুক্রবারই নৈহাটিতে এসে মমতা অভিযোগ করেন, ‘মতুয়াদের অনেকে ভুল বোঝাচ্ছে। কার্ড দেবে বলে অনেকের কাছে টাকাও কালেকশন করা হয়েছে।’ আর এবার পরিচয়পত্র বিলি নিয়ে মুখ খুলেছেন ঠাকুর পরিবারের পুত্রবধূ তথা প্রাক্তন সাংসদ মমতাবালা।
তিনি বলেন, মতুয়া মহাসঙ্ঘের সদস্য বা দলপতি, তাঁদের আগেও পরিচয়পত্র দেওয়া হতো। কিন্তু, এখন শান্তনু ঠাকুরের সই করা যে সব পরিচয়পত্র বিলি হচ্ছে, তা নিয়ে নানান অপপ্রচার চলছে। ওদের দেওয়া পরিচয়পত্র থাকলেই নাকি নাগরিকত্ব মিলবে! দলনেত্রীর সুরে খাদ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকেরও অভিযোগ, টাকা নিয়ে চলছে ফর্ম বিলি। টাকার বিনিময়ে দেওয়া হচ্ছে পরিচয়পত্র।