উত্তরপ্রদেশে এনআরসি ও নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ চলাকালীন সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন অনেকে। বিজনোর জেলায় ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়ি গিয়েছিলেন যোগী আদিত্যনাথ মন্ত্রিসভার সদস্য কপিল দেব আগরওয়াল। তাঁদের সঙ্গে দেখা করেন মন্ত্রী। কিন্তু বিজনোরে সংঘর্ষে নিহত দুই সংখ্যালঘু যুবকের বাড়ি গেলেন না তিনি। এই ঘটনায় বিতর্ক দেখা দিয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
মৃত দুই মুসলিম পরিবারের ধারে কাছে ঘেঁষলেন না কপিলদেব৷ অবশ্য তিনি নিখাঞ্জ নন, আগরওয়াল৷ বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশের রাজ্য মন্ত্রী৷ প্রধানমন্ত্রীর ‘সব কা সাথ, সবকা বিকাশ’ মানলেন না কেন? সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের উত্তরে তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, মৃত দাঙ্গাকারী দু’জনের বাড়িতে কেন যাব? পুলিশের গুলিতে তাঁদের মৃত্যু হয়েছে৷ সাংবাদিকরা কপিলকে মনে করালেও তাঁর এক গোঁ, এরা দাঙ্গাকারী৷
সম্প্রতি বিজনোরের নেহাতুরে সিএএ বিরোধী বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে দুই মুসলিম যুবক মারা গিয়েছে৷ ঘটনায় আহতর সংখ্যা ৫০৷ এরমধ্যে আছেন ওমরাজ সাইনি৷ তাঁর বক্তব্য, দাঙ্গাকারীর হামলায় তিনি আহত হয়েছেন৷ তাঁকে দেখতে এর আগে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী এসেছিলেন৷ কিন্তু তিনি পাশপাশি মৃত দুই মুসলিম পরিবারের সঙ্গেও দেখা করেছিলেন৷ তবে এবার যোগীর মন্ত্রী কপিলদেব আগরওয়াল ওমরাজের সঙ্গে দেখা করলেন৷ সাংবাদিকদের তিনি সাফ জানান, তিনি কোনও সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করছেন না৷ মোদীর সবকা সাথ, সব কা বিকাশ অগ্রাহ্য করছেন না৷ তিনি শুধু দাঙ্গাকারী বলে মৃত দুই মুসলিমদের বাড়িতে যাননি৷
ওম রাজ সাইনির পরিবারের দাবি, তিনি কোনও রকমের আন্দোলনে ছিলেন না। নিজের কাজ সেরে ফেরার পথে সংঘর্ষকারীদের গুলি লাগে তাঁর। তিনি ছাড়া গত শুক্রবার ২০ বছরের সুলেমান ও ২৫ বছর বয়সি আইএএস পরীক্ষার্থী আনাসের মৃত্যু হয়। এই ঘটনার পর পুলিশের তরফে জানানো হয়, সুলেমান সংঘর্ষকারীদের মধ্যে ছিলেন। পুলিশের উপর তাঁরা গুলি চালান। ফিরতি গুলিতে প্রাণ যায় তাঁর। অথচ সুলেমানের পরিবারের দাবি, কোনও রকম সংঘর্ষের ঘটনায় যুক্ত ছিলেন না তিনি।
মন্ত্রীর এই ঘটনার পরে বিরোধিতা শুরু করেছে কংগ্রেস। কংগ্রেসের এক নেতার অভিযোগ, মৃত্যুর মধ্যেও রাজনীতি দেখছে বিজেপি। সব ক্ষেত্রেই ধর্মকে সামনে আনছে তারা। একটা নির্দিষ্ট ধর্মের লোকেদের উপর অত্যাচার করা হচ্ছে। বিজেপি মন্ত্রীর এই কাজই বুঝিয়ে দিচ্ছে তাদের মানসিকতা। মানুষ সব দেখতে পাচ্ছেন। মানুষই এর জবাব দেবেন।