‘সকল দেশবাসীর জন্যই ‘জাতীয় নাগরিক পঞ্জী’(এনআরসি) হবে।’ লোকসভা ভোটের আগে এক টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে সেই মোদীই রবিবার রামলীলা ময়দানে এই দাবি করেছেন যে, ‘এনআরসি নিয়ে সরকারের মধ্যে কোনও কথা হয়নি। বিরোধীরা মিথ্যা বলছেন!’ এই দ্বিচারিতা নিয়েই এবার সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে বিঁধল কংগ্রেস।
টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া মোদীর ওই সাক্ষাৎকারের অংশ গতকাল সকালেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিয়েছে কংগ্রেস। দলের নেতারা বলছেন, ‘যাঁরা ভাবছেন গত কাল রামলীলা ময়দানে প্রধানমন্ত্রী শুধু তাঁর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বক্তব্য খণ্ডন করেছেন, ভুল। যদি ভাবেন, দেশের রাষ্ট্রপতি, প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যেরও উল্টো পথে হেঁটেছেন, তা-ও ভুল। নরেন্দ্র মোদী নিজে নিজেকেই মিথ্যাবাদী প্রমাণ করেছেন। যাঁরা আকছার মিথ্যা বলেন, তাঁদের এমন সমস্যা হয়। ভুলে যান, নিজে কখন কী বলেছেন!’
‘চল-ঝুটা’ হ্যাশট্যাগ দিয়ে ইতিমধ্যেই তোলপাড় নেট দুনিয়া। এত দিন ধরে সংসদের ভিতরে ও বাইরে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বার বার বলে এসেছেন, প্রথমে নাগরিকত্ব বিল, পরে এনআরসি। সেই অমিত শাহর দাবি খণ্ডন করে কেন এনআরসির অবস্থান থেকে পিছু হটছেন মোদী? কেন বলছেন, ২০১৪ সালে তিনি ক্ষমতায় আসার পর সরকারে, মন্ত্রীসভায় এনআরসি নিয়ে কোনও আলোচনাই হয়নি, শুধু সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে আসামে তা করতে হয়েছে? আচমকাই এনআরসি নিয়ে পুরনো সব মন্তব্য অস্বীকার কেন?
নয়া নাগরিকত্ব আইন এবং এনআরসি নিয়ে মোদীর পিছু হটা নিয়ে প্রশ্ন করলেই বিজেপি মুখপাত্ররা এখন বলছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলে দেওয়ার পর আমাদের কি বলা সাজে?’ তবে মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানের মত, ‘গোটা দেশেই এনআরসি হবে। কিন্তু আলোচনার পরেই।’ শাহের টিমের সদস্য পি মুরলীধর রাও-ও বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী তো বলেননি, এনআরসি শুরু হবে না। তিনি শুধু বলেছেন, এনআরসি শুরু হয়নি। এই নিয়ে দলের অবস্থান স্পষ্ট করা আছে বিজেপির ইস্তাহারে।’