সাধারণ মানুষের ওপর গেরুয়া শিবিরের হামলা নতুন কিছু নয়। তবে এবার সব কিছুর সীমা ছাড়িয়ে গেল। জয় শ্রীরাম ধ্বনি তুলে মহিলাদের উপর চড়াও হল একদল গেরুয়া আশ্রিত দুষ্কৃতী। এবার ঘটনাস্থল খোদ কলকাতার বাঘাযতীনে। জানা যাচ্ছে, যাদবপুর ও সংলগ্ন অঞ্চলে এনআরসি ও সিএএ নিয়ে সচেতনতা প্রচার করছিলেন ১৫-২০ জন। এঁদের মধ্যে অধিকাংশই মহিলা। ছিলেন কবি জয় গোস্বামীর মেয়ে দেবত্রী গোস্বামীও।
সূত্রের খবর, দেবত্রী গোস্বামী ও তাঁর সঙ্গীসাথীরা মিলে ‘উইমেন ইন রেসিস্ট্যান্স’ নামের একটি সংগঠনের তরফে এনআরসি ও সিএএ নিয়ে সচেতনতা প্রচার করছিলেন যাদবপুর ও সংলগ্ন এলাকায়। ১৫-২০ জনের দল ছিলেন তাঁরা। বেশিরভাগই মহিলা। কয়েক জন বয়স্ক মানুষও ছিলেন। গাঙ্গুলিবাগান থেকে বাঘাযতীন এক নম্বর কলোনি অবধি গিয়ে, প্রচার শেষ করেছিলেন বলে জানিয়েছেন তাঁরা। তার পরে আট-দশ জন দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন একটি জায়গায়, চা খাচ্ছিলেন। তাঁদের অভিযোগ, আচমকাই মুখে কাপড় বাঁধা আট জন অচেনা ব্যক্তি লাঠি নিয়ে হামলা করে তাঁদের উপর। সে সময়ে তারা ‘জয় শ্রী রাম’ ধ্বনি দিচ্ছিল বলে পুলিশের কাছে জানিয়েছেন আক্রান্তরা।
চিত্রশিল্পী দেবলীনা মজুমদারও এদিন উপস্থিত ছিলেন। তাঁর ক্যামেরা পর্যন্ত দুষ্কৃতীরা ভেঙে দিয়েছে বলে জানা যাচ্ছে পুলিশ সূত্রে। দেবলীনাকে মারধরও করে দুষ্কৃতীরা। এই মুহূর্তে মাথায় গুরুতর চোট পেয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি। দুষ্কৃতীরা মহিলাদের মারধর করতে থাকলে ঘটনাস্থলে এলাকার বাসিন্দারা ছুটে আসেন। হামলাকারীদের মধ্যে একজনকে ধরেও ফেলা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
জয় গোস্বামীর মেয়ে দেবত্রী গোস্বামী, যিনি বুকুন নামে সোশ্যাল মিডিয়ায় ও অন্যান্য জায়গায় পরিচিত, তিনি ফেসবুকে বিষয়টি জানান পরে। তিনি লেখেন, “বাঘাযতীন আই ব্লক মোড়ে আমাদের পথসভা শেষ হওয়ার পরে কয়েক জন দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছিলাম। তখন আট জন ‘এবিভিপি গুন্ডা’ জয় শ্রী রাম বলতে বলতে, মুখ বেঁধে, হাতে এক মানুষ লম্বা বাঠি নিয়ে আমাদের উপর চড়াও হয়। …আমাদের কাছে প্রতিরোধের কিছু ছিল না। দু’জন হাসপাতালে ভর্তি। এক জনকে ধরতে পারি, তাকে যাদবপুর থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। এফআইআর করা হয়।”