সারা দেশে নাগরিকত্ব আইন লাগু করার পর থেকেই দেশ উত্তাল হয়ে উঠেছে। অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি রাজ্যে রাজ্যে। বিরোধিতার পারদ সপ্তম সুরে। দেশের সব বিরোধী দলগুলো এক জোটে প্রতিবাদে সামিল হয়েছে। শুধু তাই নয় গেরুয়া শিবিরের অন্দরেও সেই রেশ লেগে আছে। পাশাপাশি গলা মিলিয়েছেন সাধারণ মানুষ। তবে এই বিক্ষোভকে শুধু মুসলিম বিক্ষোভের আখ্যা দিচ্ছেন বিজেপি নেতৃত্ব।
বিরোধীদের মতে, মুসলিম বিক্ষোভকারীদের ক্ষেত্রে দিল্লী তথা বিজেপি শাসিত রাজ্যের পুলিশ কঠোর দমননীতি নিচ্ছে। প্রথমে জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া, আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়ুয়াদের উপরে চড়াও হওয়া, গত কাল পুরনো দিল্লির দরিয়াগঞ্জে শান্তিপূর্ণ মিছিলে লাঠি চালানো তারই নমুনা বলে বিরোধীদের দাবি। ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, মিছিল যখন দরিয়াগঞ্জের গলিতে, পুলিশ পিছন থেকে হঠাৎ তাড়া করে এসে লাঠি চালায়।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, কারা হিংসা করছেন, তা পোশাক দেখেই চেনা যাচ্ছে। এ ভাবে বিশেষ সম্প্রদায়কে তিনি ইঙ্গিত করলেন কেন, সে প্রশ্ন তখনই উঠেছিল। বিজেপি নেতৃত্ব নিয়মিত ভাবে নয়া নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকে ‘মুসলিম অভ্যুত্থান’ হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করছে। এই আইনের পক্ষে যে ১১০১ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি বিবৃতি দিয়েছেন, তাঁদের অন্যতম স্বপন দাশগুপ্ত টুইটারে যুক্তি দিয়েছেন, ‘‘ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে যে এই অশান্তি রাজনৈতিক ভাবে কোণঠাসা হয়ে পড়ার বিরুদ্ধে মুসলিমদের অভ্যুত্থান। নাগরিকত্বের বিষয়টি তাতে সুবিধা মতো যোগ করে নেওয়া হয়েছে।’’
অন্যদিকে, কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী এদিন বিবৃতিতে বলেছেন, ‘‘এনআরসি, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন দেশের গরিব মানুষের বিরুদ্ধে। সংবিধানের মূল আত্মার বিরুদ্ধে। মানুষ এর বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে সংবিধানের পক্ষে লড়ছেন। কিন্তু সরকার বর্বর দমন ও হিংসার নীতি নিচ্ছে।’’
অন্যদিকে, এদিন ভোররাতে নিজেই পুলিশের হাতে ধরা দিয়েছিলেন ভীম আর্মির প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদ। আদালত তাঁকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে। দরিয়াগঞ্জ ও সীমাপুরী থানায় ধৃতদেরও জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আজাদকে জেলে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়ার আগে তিস হাজারি আদালতের বিচারক শুনানির সময়ে সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে বিধিনিষেধ জারি করেন।