অ্যান্ড্রু জনসন এবং বিল ক্লিনটনের পর আমেরিকার ইতিহাসে তৃতীয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে হাউজ অব রেপ্রেজেন্টেটিভে ইমপিচমেন্ট আনা হল ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসাবে নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন। এবং দ্বিতীয় অভিযোগটি হল ট্রাম্প কংগ্রেসের কার্যক্রমে বাধা দিচ্ছেন।
আমেরিকার হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে ইতিমধ্যেই হয়েছে একদফা ভোটাভুটি। দুটি অভিযোগের ক্ষেত্রেই ইমপিচমেন্ট নিয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভোট পড়েছে প্রতিনিধি পরিষদে। প্রথম অভিযোগের ক্ষেত্রে ২৩০ ভোট পড়েছে ইমপিচমেন্টের পক্ষে এবং ১৯৭ ভোট পড়েছে বিপক্ষে। দ্বিতীয় অভিযোগের ক্ষেত্রেও প্রয়োজনীয় ২১৬ ভোটের বেশি সংখ্যক ভোট পড়েছে। ইমপিচমেন্টের পক্ষে পড়েছে ২২৯ ভোট ও বিপক্ষে ১৯৮ ভোট।
এখন প্রেসিডেন্ট পদ থেকে ট্রাম্পকে অপসারণ করা হবে কিনা সেক্ষেত্রে আগামী জানুয়ারিতে সেনেটের ভোটের পরই তা স্পষ্ট হবে। তবে সেনেটে যেহেতু রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত তাই সেখানে এটি পাস হবার সম্ভাবনা প্রায় নেই বলে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের মত।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ দুটি হলো- তিনি তার পদ ব্যবহার করে তার ডেমোক্র্যাট রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী জো বিডেনের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে ইউক্রেনের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে চেষ্টা করেছিলেন। দ্বিতীয়টি হলো- ইমপিচমেন্টের তদন্তে সহায়তা করতে অস্বীকার করে তিনি কংগ্রেসের কাজে বাধা সৃষ্টি করেছেন।
ডেমোক্রেটিক হাউজ স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি একটি উদ্বোধনী ভাষণের মাধ্যমে বুধবারের শুনানি শুরু করেন। তিনি বলেন, শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে আমেরিকানরা গণতন্ত্রকে রক্ষার জন্য লড়াই করেছে এবং মৃত্যু বরণ করেছেন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে আমাদের প্রজাতন্ত্রের দর্শন হোয়াইট হাউসের কর্মকাণ্ডে হুমকির মুখে পড়েছে।
বুধবার হাউসের স্পিকার তথা ডেমোক্র্যাটিক নেত্রী ন্যান্সি পেলোসিকে একটি ছ’পাতার চিঠি লিখেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। চিঠির ছত্রে ছত্রে হাউসের ডেমোক্র্যাট সদস্যদের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়েছেন ট্রাম্প। সেখানে ইমপিচমেন্ট পদ্ধতিকেই তিনি ‘অভ্যুত্থানের চেষ্টা’ এবং ‘বিকৃত বিচার’ বলে উল্লেখ করেছেন।
হোয়াইট হাউসেরই এক নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক কর্মী সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, প্রায় এক সপ্তাহ ধরে ওই চিঠিটি লেখার প্রস্তুতি নিয়েছেন ট্রাম্প। চিঠি লিখতে নিয়েছেন নিজের আইনজীবীদের পরামর্শও। তবে চিঠিতেই ট্রাম্প কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন, ইমপিচমেন্ট ভোটাভুটি প্রক্রিয়া এখন আটকানো যাবে না। তবে তিনি যে অন্যায় করেননি, বারবার তা দাবি করেছেন ট্রাম্প।