মোদী জমানায় শিকেয় উঠেছে দেশের নারীসুরক্ষা। ‘আচ্ছে দিনে’ প্রায় প্রতিদিনই সামনে আসছে দেশের কোনও না কোনও প্রান্তে ঘটা ধর্ষণ ও নৃশংস খুনের ঘটনার কথা। হায়দ্রাবাদ, উন্নাওয়ের মতো একের পর এক জায়গায় ধর্ষিতাকে নৃশংসভাবে খুন করার ঘটনায় যখন উত্তাল গোটা দেশ, ফুঁসছেন প্রায় প্রতিটি দেশবাসী, তখন এই সংক্রান্ত এক রিপোর্ট বেশ চমকে দেওয়ার মতই। অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস(এডিআর)-এর সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুযায়ী গত ১০ বছরে (২০০৯-২০১৯) মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে জড়িয়ে পড়া লোকসভার সাংসদের সংখ্যা ৮৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২ থেকে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯-এ।
স্বাভাবিকভাবেই এই পরিসংখ্যান সামনে আসতেই দেশের রাজনৈতিক মহলে রীতিমতো বিতর্কের ঝড় বইতে শুরু করেছে। প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিক দলগুলির সদিচ্ছা ও সামাজিক দায়বদ্ধতা নিয়েও। সংগৃহীত তথ্য বিশ্লেষণ করে এডিআর জানিয়েছে, এই পরিসংখ্যান থেকেই স্পষ্ট যে, রাজনৈতিক দলগুলি মোটেই মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিচার করে না৷ নাহলে এই সংক্রান্ত অপরাধে নাম জড়ানো সত্ত্বেও সংশ্লিষ্টরা ভোটের টিকিট পান কী করে? এডিআরের রিপোর্টে জানানো হয়েছে, প্রার্থীদের নির্বাচনী হলফনামা খতিয়ে দেখেই এই চাঞ্চল্যকর পরিসংখ্যান সামনে এসেছে।
হলফনামায় ফৌজদারি মামলায় নাম জড়ানোর কথা জানিয়েছেন ৭৫৬ জন সাংসদ এবং ৪০৬৩ জন বিধায়ক। এরমধ্যে মহিলাঘটিত অপরাধে নাম জড়িয়েছে ১৮ জন সাংসদ ও ৫৮ জন বিধায়কের। তবে সবচেয়ে বড় খবর, এরমধ্যে শীর্ষস্থানে রয়েছে বিজেপিই। তাদের ২১ জন সাংসদ-বিধায়ক মহিলাঘটিত অপরাধে অভিযুক্ত। আর দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে কংগ্রেস(১৬)। যার মধ্যে ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে ৬ বিধায়ক ও ৩ সাংসদের বিরুদ্ধে। এডিআরের এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই প্রশ্ন উঠছে, আইনের রক্ষকরাই যদি এভাবে ভক্ষক হয়ে ওঠে, তাহলে আদৌ কি সুবিচার পাওয়া সম্ভব? মিলছে না উত্তর।