কয়েক মুহুর্ত ওসব এনআরসির জুজু, ভিটেমাটিচাঁটি হওয়ার ভয়, বাঙালি খেদানোর ফন্দি, মাতৃভাষার বদলে হিন্দি আরোপের চক্রান্ত ফক্রান্ত জাস্ট ইগনোর করে উদযাপন করুন বাঙালির এই বিশ্বজয়ের মুহুর্ত। ভারতকে আবার জগৎ সভায় শ্রেষ্ঠ আসনে বসানোর এই মুহুর্ত। অভিবাদন নিন এস্থার ডাফলো ও অভিজিৎ বিনায়ক বন্দোপাধ্যায়। আরেকটা রুপকথা লিখলেন আপনারা আমাদের নস্টালজিয়ার ঝুলিতে৷
দুজনকে দেখুন ওই৷ ধুতি,পাঞ্জাবি আর কালো কোট পরে অভিজিৎ আর মিষ্টি একটা শাড়ি পরে এস্থার নোবেল পুরস্কার নিচ্ছে৷ ভারত থেকে শেষবার ওই মঞ্চে গেছিল, অমর্ত্য সেন। প্রথম ভারতীয় হিসেবে গেছিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর৷ এবার ও অভিজিৎ নোবেল প্রেস কনফারেন্স এ বাংলাতেই উত্তর দিয়েছেন। নোবেলটা নিতে এসেছেন বাংলার পোষাক পরে, নদী, ক্ষেতের ফসল, শহরের পুরনো মিছিল, দামাল কফিহাউস, উদ্দাম মহানগর বুকে।
নেক্সট টাইম মগনলাল মেঘরাজ দেশ, দুনিয়া বা জাতীয় অবদান নিয়ে আপনাকে জ্ঞান দিতে এলে তাঁদের বলাটা প্রয়োজনীয় যে ভারতের প্রথম নোবেল রবীন্দ্রনাথ আনে, অর্থনীতিতে প্রথম নোবেল আনে অমর্ত্য সেন, সে ও বাঙালি আর এখন অভিজিৎ। এছাড়া মাদার টেরেসা ও রোনাল্ড রস ও বাংলা থেকেই নোবেল পান।
বারবার নোবেল এনে দেবে বাঙালি, অস্কার আনবে বাঙালি, বিসিসিআই চালাবে বাঙালি, বলিউড রাজ করবে বাঙালি, নাসার বিজ্ঞানী হবে বাঙালি, জনগনমন লিখবে, বন্দেমাতরম লিখবে বাঙালি, ভারতমাতার ছবি আঁকবে বাঙালি, গোটা দেশে দক্ষ হাতে বড় বড় কোম্পানি চালাবে বাঙালি আর সেই বাঙালিকে ডিটেনশন ক্যাম্পের জুজু দেখানো হবে, বাংলাদেশ চলে যেতে বলা হবে, ওসব চলবে না।
নিজের কলকাতা, নিজের বাংলা নিয়ে গর্ব করতে শিখুন। কোন মগনলাল মেঘরাজ কি বললো তাতে আমাদের ঘাবড়ে গেলে চলবে? হাতটা শক্ত করে ধরতে শিখুন। উদযাপন করতে শিখুন বাঙালিয়ানা। বাঙালি জেগে উঠলে কিন্তু ভিসুভিয়াস ও আঁতকে ওঠে। ভরসা রাখুন নিজের ঐতিহ্যে, নিজের ভাষায়, নিজের সংস্কৃতিতে। দেশ এগুলো দিয়েই তৈরি।
আবার মনে করিয়ে দিই। বাঙালি সব পারে। বোরোলিন, মাংকি ক্যাপ, জেলুসিল আর তালমিছরি পেলে বাঙালি সব করতে পারে। জয় বাংলা!
মতামত লেখকের ব্যক্তিগত