আগামীকাল লোকসভায় পাস হয়ে গেছে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল। সারা দেশে এই বিল লাঘু হওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা। আর তাতেই দেশের নানা প্রান্তে উঠছে বিক্ষোভের ঝড়। বিশেষ করে এই বিলের প্রতিবাদের আওয়াজ উঠেছে উত্তর-পূর্ব ভারত থেকে। গতকাল এই আভাস পাওয়ার পর থেকেই জ্বলছে আসাম। মঙ্গলবার সকালে সেই রেশ আরও ছড়িয়েছে। এদিন আসামের ডিব্রুগড়, জোড়হাটের বিভিন্ন এলাকায় রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ-বিক্ষোভে সোচ্চার হন সাধারণ মানুষ৷ ত্রিপুরার পরিস্থিতিও উত্তপ্ত। উত্তর পূর্বাঞ্চলের অন্যান্য রাজ্যেও ছড়াচ্ছে ক্ষোভ।
মঙ্গলবার সকাল থেকে অসমের জোড়হাট, ডিব্রুগড়ের বিভিন্ন এলাকায় শুনশান রাস্তাঘাট, বন্ধ দোকানবাজার, বন্ধ যানবাহন চলাচলও৷ বঙ্গাইগাঁওয়ের বিভিন্ন এলাকাতেও সকাল থেকে বিক্ষোভ৷ রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে চলে অবরোধ৷ নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রতিবাদে মঙ্গলবার আসামে ১১ ঘণ্টার বনধ ডাকে নর্থ-ইস্ট স্টুডেন্ট অর্গানাইজেশন বা এনইএসও-র৷ বনধকে সমর্থন আরও ১৬টি সংগঠনের৷ উত্তর পূর্বাঞ্চলের অন্যান্য রাজ্যেও ছড়াচ্ছে ক্ষোভ। নেসো অর্থাৎ নর্থ ইস্ট স্টুডেন্ট অর্গানাইজেশনের বিরাট প্রভাব রয়েছে উত্তর পূর্বের মনিপুর, মেঘলায়, নাগাল্যান্ড ও মিজোরামে। বিভিন্ন উপজাতি সংগঠনের এই যৌথ মঞ্চের আন্দোলন হিংসাত্মক পরিবেশ তৈরি করতে পারে বলে আশঙ্কা।
উল্লেখ্য, এই অসমেই সম্প্রতি লাগু হয়েছে নাগরিকত্ব সংশোধনীর চূড়ান্ত তালিকা। তাতে অ-অসমীয়াদের হটাতে বিশেষ করে যারা বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশকারী তাঁদের নাম কাটা পড়েছে বলা হয়। কার্যত দেখা গিয়েছে, এই তালিকায় লক্ষ লক্ষ হিন্দুদের নাম বাদ পড়েছে। সেই সঙ্গে নাম কাটা গিয়েছে অসমবাসী ভূমি সন্তানদেরও। তারই মাঝে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল লাগু পাশ করিয়ে উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে তীব্র বিক্ষোভের মুখে বিজেপি। এতে বলা হয়েছে, প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলির হিন্দুদের ভারতে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। আর অ-হিন্দুদের কোনও সুযোগ নেই।
বিরোধীদের অভিযোগ, সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতাকে লঙ্ঘন করে বিজেপি ধর্মীয় রাষ্ট্র তৈরির লক্ষ্যে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলটি এনেছে। তাকে আইনে পরিণত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলে সওয়াল করেন বিরোধী সাংসদরা৷ দিনভর বিতর্ক শেষে রাত ১২টায় লোকসভায় পাস হয় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল৷