লোকসভায় আজ বহু চর্চিত নাগরিকত্ব সংশোধন বিল পাশ হয়ে গেছে। আগামীকাল রাজ্যসভায় এই বিলের পেশ হবে। আর সেখানে পাশ হয়ে গেলেই সারা দেশে লাঘু হয়ে যাবে এই বিল। আর তারপরই ভারতবাসীর ঘাড়ে নেমে আসবে এই খাঁড়া। তাতে বাদ পড়বে হাজার হাজার ভারতবাসী। আর সেই কারণেই লোকসভায় এই বিলের বিরোধিতায় সরব হন বিরোধীরা। বিরোধীরা ওই বিলের বিরুদ্ধে হাতিয়ার করেছেন সংবিধানের ১৪ নম্বর অনুচ্ছেদকে।
তাঁদের বক্তব্য, নতুন বিল ওই অনুচ্ছেদের বিরোধী। কারণ তাতে আছে, আইনের চোখে সকলেই সমান। কোনও ব্যক্তি ভারতের নাগরিক হোন বা না হোন, আইন তাঁকে অন্যদের সমান হিসাবেই দেখবে। প্রস্তাবিত বিলে ছয় দশকের পুরানো নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করতে চাওয়া হয়েছে। তার উদ্দেশ্য, পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান থেকে আসা অমুসলিম উদ্বাস্তুরা যাতে সহজে ভারতের নাগরিকত্ব পেতে পারেন, তার ব্যবস্থা করা। প্রায় প্রতিটি বিরোধী দল, এমনকি উত্তর-পূর্ব ভারতে বিজেপির সহযোগী দলগুলির সাংসদরা অনেকে বলেছেন, ওই বিল বৈষম্যমূলক। তা সংবিধানে উল্লিখিত ধর্মনিরপেক্ষতার নীতির বিরোধী।
উল্লেখ্য, সংবিধানের ১৪ নম্বর ধারায় বলা আছে, ভারতের সীমার মধ্যে আইনের চোখে সকলেই সমান। সরকার কোনও ব্যক্তিকে আইনি সুরক্ষা পাওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে পারে না। আইনের চোখে সবাই সমান। পরে অবশ্য ওই কথাগুলির একটু অদল বদল করা হয়েছে। নয়তো সমাজে পিছিয়ে থাকাদের বিশেষ সুবিধা দেওয়া যায় না। কাউকে আইনের সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। প্রয়োজনে সমাজের বঞ্চিত শ্রেণিগুলির স্বার্থে আলাদা আইন তৈরি করা যেতে পারে।
সংবিধানের ১৪, ১৫ এবং ১৬ নম্বর ধারায় সাম্যের অধিকারের কথা বলা আছে। ১৫ নম্বর ধারায় নির্দিষ্ট করে বলা হয়েছে, ধর্ম, জাতীয়তা, জাতপাত, লিঙ্গ অথবা জন্মস্থানের ভিত্তিতে কারও বিরুদ্ধে বৈষম্য করা যাবে না। ১৬ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, সরকারি চাকরিতে সকলকে সমান সুযোগ দিতে হবে।