গত বুধবার সকালেই রাতারাতি নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল(ক্যাব)-এ অনুমোদন দিয়ে দিয়েছিল মোদী মন্ত্রীসভা। আর আজ সকালেই লোকসভায় এই বিল পেশ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কিন্তু বিল পেশের আগে থেকেই ক্যাব-বিরোধী আন্দোলনে জেরবার গোটা আসাম। বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল বাতিলের দাবিতে ভাঙছে বিজেপি এবং তাদের জোট শরিক অসম গণ পরিষদ (অগপ)। আসামের মন্ত্রীদের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদেরও বিক্ষোভের হাত থেকে পালিয়ে বাঁচতে হচ্ছে। শুধু তাই নয়। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালকে রবিবারও তাঁর বাসভাবনে কালো পতাকা দেখানো হয়।
যদিও বিক্ষোভকে আমল দিতে নারাজ সর্বানন্দ। তাঁর পুলিশ ‘উসকানি’র অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদী নেতা’ গর্গ চ্যাটার্জির বিরুদ্ধে। ক্যাব-বিরোধী সংগঠন কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতি (কেএমএসএস) সোম থেকে বুধবার পর্যন্ত অসম বনধের ডাক দিয়েছে। বনধকে সমর্থন জানিয়েছে সারা অসম ছাত্র সংস্থা। ক্যাব বাতিলের দাবিতে সোম ও মঙ্গলবার আসাম ও ত্রিপুরায় ১২ ঘণ্টার বনধের ডাক দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার গোটা উত্তর-পূর্বাঞ্চল বনধের ডাক দিয়েছে নেসো বা উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ছাত্র সংগঠন।
ক্যাব-বিরোধিতার জেরে বেকায়দায় আসামের বিজেপি এবং অগপ নেতা ও মন্ত্রীরা। শুক্রবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামেশ্বর তিলি ও রাজ্যের মন্ত্রী ফণিভূষণ চৌধুরি বিক্ষোভকারীদের হাত থেকে পালিয়ে বাঁচেন। শুধু তা-ই নয়, ক্যাব-বিরোধিতা করে ইতিমধ্যেই দল ছেড়েছেন বেশ কয়েকজন বিজেপি নেতা। ভাঙছে গেরুয়া ছাত্র সংগঠন এবিভিপিও। শরিক দল অগপ-র কর্মীরাই বিভিন্ন জায়গায় পার্টি অফিস ভাঙচুর করছেন। সভাপতি অতুল বরার বিরুদ্ধে উঠছে বিশ্বাসঘাতকার অভিযোগ।
আবার ক্যাব-বিরোধী ছাত্র সংগঠন আসুও ‘রণহুঙ্কার’ দিয়েছে গুয়াহাটির কটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। এই পরিস্থিতিতে আসামের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে ক্যাব-বিরোধী বিক্ষোভ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন শিক্ষামন্ত্রী সিদ্ধার্থ ভট্টাচার্য। কিন্তু সেই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে তীব্রতর হয়েছে ছাত্র আন্দোলন। এমনকী খোদ শিক্ষামন্ত্রীর বাড়িতেই ক্যাব-বিরোধী পোস্টার পড়েছে। রাজ্যের ছাত্ররা সিকিম ও দিল্লীতেও পৌঁছে দিয়েছেন আন্দোলন।