আইএনএক্স দুর্নীতি মামলায় জামিন পেলেন না প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম৷ ১১ ডিসেম্বর পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত তাঁকে তিহার জেলেই থাকতে হবে৷ বুধবার দিল্লী হাইকোর্টে বিচাররক ভানুমতীর এজলাসে এই শুনানি হয় ৷ চিদম্বরমের হয়ে তাঁর সতীর্থ আইনজীবী কপিল সিব্বল সওয়াল জবাব করেন৷ কপিলের বক্তব্য, তাঁর মক্কেল রঙ্গা- বিল্লার মতো দুষ্কৃতী নয়, তবে কেন জামিন দেওয়া হচ্ছে না? তাঁকে জামিন না দিলে বিচার ব্যবস্থা সম্পর্কে মানুষের কাছে ভুল বার্তা যাবে বলে মনে করেন তিনি৷ অন্যদিকে চিদম্বরম আদালতকে জানান এমন একটা মামলায় তাঁকে ৯৮ দিন হাজত বাস করতে হচ্ছে, যাতে তিনি আদতেও দোষী কিনা তা সাব্যস্ত হয়নি৷
সিব্বলের কথায়,”জেলে ৯৯ দিন ধরে রয়েছেন চিদম্বরম। একদিনও জেরা করেনি হয়নি। কোনও সাক্ষীর সঙ্গে মুখোমুখিও বসায়নি। প্রমাণ নষ্টের অভিযোগও মেলেনি এখনও পর্যন্ত। অথচ হাইকোর্ট জামিন দিতে অনীহা করছে।” তিনি আরও বলেন,”একটা ইমেল, একটা এসএমএস বা নথিও মেলেনি, যার সঙ্গে চিদম্বরমের যোগ রয়েছে। অন্যরা বাইরে রয়েছে। অথচ কিংপিন বলে (চিদম্বরম) জেলে রাখা হয়েছে। কারণ, উনি কার্তিক চিদম্বরমের বাবা।”
উল্লেখ্য, ১৯৭৮ সালে দিল্লীতে এক নেভি অফিসারের ছেলে এবং মেয়ে সঞ্জয় এবং গীতা কাপুরকে অপহরণ করে কুলজিৎ সিং ওরফে রঙ্গা খাউস এবং জসবীর সিং ওরফে বিল্লা। উদ্দেশ্য ছিল মোটা টাকা মুক্তিপণ আদায় করা। কিন্তু অপহরণের সময় রঙ্গা এবং বিল্লা জানত না যে এই দুই নাবালক-নাবালিকার বাবা নৌসেনার একজন অফিসার। একথা জানার পরেই ভয় পেয়ে যায় দুই অপহরণকারী। তারপর নৃশংস ভাবে সঞ্জয় এবং গীতাকে খুন করে রঙ্গা এবং বিল্লা। ১৯৮২ সালে রঙ্গা এবং বিল্লাকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনায় আদালত।
দুই অপহরণকারীর নৃশংসতা দেখে সেসময় শিউরে উঠেছিল সাধারণ মানুষ। এত বছর পর ফের ওই ঘটনার কথা মনে করিয়ে দিলেন চিদম্বরম।
গত ২১ অগস্ট বাড়ির পাঁচিল টপকে ৭৪ বছর বয়সী বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরমকে নাটকীয়ভাবে গ্রেফতার করে সিবিআই। আইএনএক্স মিডিয়া দুর্নীতি মামলায় আর্থিক তছরূপের অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। প্রাথমিক ভাবে সিবিআই হেফাজতেই ছিলেন তিনি। কিন্তু তারপর গত ৫ সেপ্টেম্বর চিদম্বরমকে তিহাড় জেলে পাঠায় সিবিআই। ইতিমধ্যেই দিল্লির বিশেষ আদালতে চিদম্বরমকে গ্রেফতারের আবেদন জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। আদালত তা মঞ্জুর করে। এরপর ১৬ অক্টোবর জেল থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে ইডি। আপাতত ইডির হেফাজতেই রয়েছেন চিদম্বরম।