বছরের শুরুর দিকেই শবরীমালা পাহাড়ে চড়ে আয়াপ্পা মন্দিরের দর্শন করেছিলেন দু জন মহিলা। এবার ফের শবরীমালা যাওয়ার পথে তাঁদেরই একজনের মুখে ছুড়ে মারা হল লঙ্কার গুঁড়ো। ঘটনার দায় এক দক্ষিণপন্থী সংগঠনের বলেই জানিয়েছে পুলিশ প্রশাসন। মঙ্গলবার সকালে কোচির নগরপালের অফিসের সামনেই হামলার মুখে পড়েন বিন্দু আম্মিনি নামে ওই মহিলা।
গত ২ জানুয়ারি কেরলের শবরীমালা মন্দিরে প্রবেশ করেছিলেন বিন্দু আম্মিনি। কিছুদিন আগে সেই মন্দিরের দরজা খুলেছে ফের। বিন্দু আম্মিনিও আরও একবার সেই মন্দিরে প্রবেশ করতে যাচ্ছিলেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন পুনের সমাজকর্মী তৃপ্তি দেশাই। কিন্তু সোমবার পথে তাঁদের লঙ্কাগুঁড়ো নিয়ে আক্রমণ করে একদল লোক।
অভিযোগ, গাড়ি থেকে নামার পরই বিন্দুর দিকে তেড়ে যায় গেরুয়া ধুতি পরা এক ব্যক্তি। তার হাতে একটি ক্যান ছিল। তাতেই লঙ্কার গুঁড়ো ছিল বলে মনে করা হচ্ছে। বিন্দুর মুখে সেই বস্তু ছিটিয়ে দিয়ে এলাকা থেকে চম্পট দেয় লোকটি। বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও, তাতে সফল হননি ওই মহিলা।
জানা গেছিস ওই দুই মহিলা সোমবার ভোরে কোচি ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে নামেন। পরে তাঁরা কোচির পুলিশ কমিশনারের অফিসে যান। শবরীমালা মন্দিরে প্রবেশের জন্য তাঁরা পুলিশের কাছে নিরাপত্তা দাবি করেন। কথা ছিল, মঙ্গলবার আরও পাঁচ মহিলার সঙ্গে তাঁরা মন্দিরে যাবেন।
পুলিশ জানায়, এক দক্ষিণপন্থী সংগঠনের সমর্থকদের সঙ্গে তাঁদের বিতর্ক শুরু হয়। তারা আম্মিনির মুখে লঙ্কাগুঁড়ো ছুঁড়ে মারে। তাঁকে দ্রুত নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। তৃপ্তি দেশাই বলেন, ২৬ নভেম্বর যেহেতু সংবিধান দিবস, তাই তাঁরা ওইদিন মন্দির দর্শনে যেতে চেয়েছিলেন। পরে সেই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জানা গিয়েছে, লোকটির নাম শ্রীনাথ পদ্মনাভন। ২৮ বছরের শ্রীনাথ থাকে কান্নুরের কুদিয়ানমালায়।
তৃপ্তি দেশাই জানিয়েছেন, এই আক্রমণের পরেও তিনি শবরীমালা মন্দিরে যেতে চান। তাঁর কথায়, “২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছে, যে কোনও বয়সের মহিলারা শবরীমালা মন্দিরে প্রবেশ করতে পারবেন। আমি শবরীমালা মন্দির দর্শন না করে কেরল থেকে যাচ্ছি না।”
পরে বিন্দু জানিয়েছেন, ‘শবরীমালা দর্শনের অধিকার আমাদের আছে। সরকার যদি লিখিত আকারে বলে যে আমাদের মন্দিরে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না, তবেই আমরা ফিরে যাব।’ যে সাতজনের দল শবরীমালা যাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে, তাঁদের মধ্যে ৫ জন মহারাষ্ট্রের, একজন দিল্লীর ও আরেকজন হলেন বিন্দু।