মোদীর এনআরসি’র ফলে হারিয়ে যেতে পারে কিছু আদিম জনগোষ্ঠী। হয়তো এমন হতে পারে যে, পুরো গোষ্ঠীর ঠাঁই হল ডিটেনশন ক্যাম্পে! হ্যাঁ, মোদীর এই এনআরসি নীতির বলি হতে পারেন আদিবাসীরা। কারণ, তাঁদের নেই কোনও আলমারি ঠাঁসা দলিল কিংবা নিজেদের কোনো পরিচয় পত্র৷ সারাদেশে এনআরসি হলে আন্দামানের ‘জারোয়া’দের যেমন কোনও নামগন্ধই থাকবে না, তেমনই বাংলায় থাকবে না ‘শবর’ জনজাতি। পুরো গোষ্ঠীই ভারতীয় পরিচিতির সত্বা হারাবে৷ তাঁদের পরিচয়েও জুড়বে ‘বিদেশি’ তকমা।
‘শবর’ জাতিটা এমনিতেই বিলুপ্তির পথে৷ এদের গড় আয়ু পঞ্চাশ বছর বললে একটু বেশিই বলা হয়! এদের জীবন জীবিকা মূলত বনকেন্দ্রিক৷ লোকালয় থেকে হাজার ক্রোশ দূরে থাকেন এরা৷ তাই এদের ঘরে কাগজপত্র রাখার ফাইল আলমারি থাকবে, আর তাতে পুরনো দলিল-দস্তাবেজ সংরক্ষিত থাকবে, এটা ভাবা একদম মূর্খামি৷ ১৯৭১ বা তৎকালীন কোনও প্রমাণপত্রই খেড়িয়াদের কাছে থাকা সম্ভব নয়, তাই মোদীর এনআরসি নীতি অনুযায়ী এই আদিবাসী সম্প্রদায় ‘বিদেশি’! দেশের অধিবাসীদের যে ঐতিহ্য তা প্রায় বিলুপ্ত হবে৷
সমাজের এই আদিবাসী মানুষ গুলোর থেকে একটি বিষয় লক্ষ্যণীয় এবং শিক্ষণীয় যে, এরা ধর্মচাষে তেমন আগ্রহী নন৷ মানুষের সঙ্গে মানুষের বিভেদে এরা বিশ্বাসী নন। কোনও রকমে মাথা গোঁজার ঠাঁই হলেই এরা সন্তুষ্ট৷ একটু খাবারের জন্য, সরকারি ঘর পাওয়ার জন্যে অফিসে অফিসে দরখাস্ত নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, এমন শবর খুঁজে পাওয়া দুষ্কর! যেহেতু সামাজিক নন আদিবাসী সম্প্রদায়গুলি, তাই এনআরসি হলে শবরদের বা দেশের অধিবাসী সম্প্রদায়ের জায়গা হবে ডিটেনশন ক্যাম্প।