আগামীকাল বুধবার বিকেল পাঁচটার মধ্যেই সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ দিতে হবে ফডনবিশ সরকারকে। গোপন ব্যালটে আস্থা ভোট হলে চলবে না। করতে হবে লাইভ ফ্লোর টেস্ট। মঙ্গলবার সকালে সুপ্রিম কোর্টের এই রায়েই কেঁপে গিয়েছিল মহারাষ্ট্রের ফডনবিশ সরকারের ভিত। এরপর যখন আস্থাভোটের তোড়জোড় চলছে, ঠিক তখনই চরম ধাক্কাটা এল অজিত পাওয়ারের দিক থেকে। উপ মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে শরদ-ভাইপোর ইস্তফাটাই যেন ছিল ফডনবিশ সরকারের কফিনে শেষ পেরেক। শেষরক্ষার চেষ্টা করতে জরুরি বৈঠকে বসেন মোদী-শাহ। যদি বার করা যায় বাঁচার উপায়। কিন্তু না, তাতেও লাভের লাভ হল না কিছুই। মোদী-শাহের এই বৈঠকের পরেই ইস্তফা দিলেন ফডনবিশ।
আগামীকাল আস্থাভোটে শুধুমাত্র দেবেন্দ্র সরকারকেই পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হত না। তা মোদী-শাহর কাছেও সম্মানরক্ষার প্রশ্ন। কারণ, শনিবার সাতসকালে যে মহানাটকীয় চালে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন দেবেন্দ্র। এবং তাঁর আগে ভোরেই তড়িঘড়ি যে ভাবে রাজ্যের রাষ্ট্রপতি শাসন প্রত্যাহার করানো হয়, তাতে মোদী-শাহ জুটিরই হাত দেখছেন অনেকে। ফলে এই আস্থাভোট শুধুমাত্র বিজেপির রাজ্য রাজনীতির ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ ছিল, এমনটা নয়। তা কার্যত ওই জুটিরও মুখ বাঁচানোর লড়াই। কিন্তু এই মহা নাটকের যে ক্লাইম্যাক্স শেষ পর্যন্ত হল তাতে মোদী-শাহ জুটির মুখ বাঁচা তো অনেক দূরের কথা, সর্বসম্মুখে ফের মুখ পুড়ল।
যেভাবে দুজনের বৈঠকের পরেই ইস্তফা দিলেন ফডনবিশ তাতে করে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বৈঠক করেও নিজেদের জায়গা সুদৃঢ় করতে কোনও পথ পাননি মোদীরা। তাই আগামীকাল হাসির খোরাক হওয়ার হাত থেকে বাঁচতে আজই ইস্তফা দিলেন ফডনবিশ।
বিজেপির শীর্ষ সূত্রে বলা হচ্ছে, আজ সুপ্রিম কোর্টের রায় ঘোষণার পর পরই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী তথা বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। তার পর ওই বৈঠক থেকেই অমিত শাহ কথা বলেন দেবেন্দ্র ফডনবিশের সঙ্গে। বিজেপির একটি সূত্রের দাবি, দেবেন্দ্রকে ইস্তফা দেওয়ার জন্য তখনই ইঙ্গিত দিয়ে দিয়েছিলেন অমিত শাহ। প্রশ্ন হল, কেন আস্থা ভোট পর্যন্ত গড়াল না গোটা পর্ব। কেনই বা অজিত পাওয়ার আগে ভাগে ইস্তফা দিয়ে দিলেন। পর্যবেক্ষকদের মতে, কারণটা স্পষ্ট। একমাত্র অজিত পাওয়ার ছাড়া যে কেউ তাদের সঙ্গে নেই, গতকাল গ্রান্ড হায়াতে বিরোধী জোটের ‘মেগা শো’তেই তা টের পেয়ে গিয়েছিল বিজেপি। ফলে আস্থাভোটে হার অনিবার্য বুঝে মুখ পোড়ার আগেই পিছু হটল তারা।