আগামীকাল বুধবার বিকেল পাঁচটার মধ্যেই সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ দিতে হবে ফডনবিশ সরকারকে। গোপন ব্যালটে আস্থা ভোট হলে চলবে না। করতে হবে লাইভ ফ্লোর টেস্ট। মঙ্গলবার সকালে সুপ্রিম কোর্টের এই রায়েই কেঁপে গিয়েছিল মহারাষ্ট্রের ফডনবিশ সরকারের ভিত। তবে গতকালই এই ‘মহা’-নাটকের ক্লাইম্যাক্স রচনা করে দিয়েছিলেন শরদ-উদ্ধবরা৷ মুম্বইয়ের গ্র্যান্ডে ১৬২ বিধায়ককে হাজির করে মাস্টারস্ট্রোক দেন তারা৷ অবশেষে এদিন উপ মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে অজিত পাওয়ার ইস্তফা দিতেই রণেভঙ্গ দিল বিজেপি৷ শেষমেশ সাংবাদিক বৈঠক করে ইস্তফা দিতে বাধ্য হলেন দেবেন্দ্র ফডনবিশও। যার ফলে আস্থাভোটের আগেই মাত্র ৪ দিনের মাথায় পতন হল ফডনবিশ সরকারের।
তবে ‘খেলা’ এখনও শেষ হয়নি। কারণ মহারাষ্ট্রেও এখন কর্ণাটকের ছায়া দেখতে পাচ্ছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা৷ প্রসঙ্গত, গত বিধানসভা নির্বাচনে কর্ণাটকে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়ননি কোনও দল৷ এরপর বিজেপির ইয়েদুরাপ্পা সরকার গড়েন৷ কিন্তু অচিরেই তাঁর বাড়া ভাতে ছাই দেয় জেডিএস-কংগ্রেস জোট৷ হার নিশ্চিত জেনে আস্থাভোটের আগেই আবেগময় ভাষণ দিয়ে পদত্যাগ করেন কর্ণাটকের আড়াই দিনের মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরাপ্পা। এরপর কর্ণাটকে সরকার গড়ে কংগ্রেস-জেডিএস জোট। মুখ্যমন্ত্রী হন এইচ ডি কুমারস্বামী। কিন্তু বিজেপির মাস্টারস্ট্রোকে কুমারস্বামী সরকার বেশিদিন স্থায়ী হয়নি৷ ফের কুর্সিতে বসেন ইয়েদুরাপ্পা৷ সেই ঘটনারই কি পুনরাবৃত্তি ঘটবে এবার? কারণ এক্ষেত্রেও দেখা গেল, আস্থাভোটের আগেই রণেভঙ্গ দিল বিজেপি৷
ইয়েদুরাপ্পার মত ফড়নবিশের ভাগ্যে ফের শিঁকে ছিঁড়বে কিনা, তা সময়ই বলবে, তবে আপাতত পাওয়ার-উদ্ধবদের চালে পিছু হটতে হল বিজেপিকে৷ গতকাল সন্ধে ৭টায় মহারাষ্ট্রের সঙ্গে সারা দেশ সাক্ষী ছিল রাজনৈতিক নাটকের এক চূড়ান্ত পর্যায়ের৷ ঘড়ির কাঁটা সাতটা ছুঁতেই মুম্বইয়ের গ্র্যান্ড হায়াতে পৌঁছাতে থাকেন বিধায়করা৷ শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউতের ঘোষণা মতই, হাজিত হন মোট ১৬২ বিধায়ক৷ সেনা-কং-এনসিপির ওই মোক্ষম চালের কাছেই মূলত হার মানল মোদী-শাহের রণকৌশল৷ তবে এরপর কী? এবার রাজ্যপাল কোশিয়ারি তিন দলের জোটকে সরকার গড়ার সুযোগ দিতে পারেন৷ কিংবা তারা নিজেরাই রাজ্যপালের কাছে সরকার গড়ার দাবি জানাতে পারে৷ তবে কং-এনসিপি-সেনা সরকার গড়লে, পরে তাদেরও বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ দিতে হবে৷