এ রজ্যের মত মহারাষ্ট্রের রাজ্যপালের বিরুদ্ধেও সাংবিধানিক পদের অপব্যবহার ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার তোয়াক্কা না করে পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের অভিযোগ উঠেছে। সংসদে এ নিয়েই মোদী সরকারকে কোণঠাসা করতে তৃণমূল নেত্রী তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরামর্শে এককাট্টা হল বিরোধী শিবির। মমতার পরিকল্পনা মতই সোনিয়া গান্ধীর নেতৃত্বে সংসদ ভবনে বি আর আম্বেদকর মূর্তির সামনে ধর্না দিল প্রায় সবকটি বিরোধী দলই।
প্রসঙ্গত, মহারাষ্ট্রে ঘোড়া কেনাবেচার অভিযোগের পাশাপাশি রাতারাতি রাষ্ট্রপতি শাসন প্রত্যাহার এবং সরকার গঠন— সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর প্রতিবাদে মঙ্গলবার সংবিধান দিবসে একজোটে সংসদের যৌথ অধিবেশন বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিল বিজেপি বিরোধী সব দল। বিক্ষোভ চলল সংসদভবনের বাইরেও। সামনে থেকে যার নেতৃত্বে সোনিয়া।
উল্লেখ্য, এ দিন পঞ্চম সংবিধান দিবস পালিত হচ্ছে গোটা দেশ জুড়ে। আগে যদিও এই দিনটি আইন দিবস হিসাবে পালিত হত। কিন্তু ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর এই দিনটিকে সংবিধান দিবস হিসাবে পালনের সিদ্ধান্ত নেয় মোদী সরকার। সেই উপলক্ষ্যে সংসদের যৌথ অধিবেশনে বক্তৃতা করেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানে সংবিধান প্রণেতাদের মধ্যে অন্যতম বি আর আম্বেদকরকে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বেঁচে থাকলে আজ সবচেয়ে বেশি খুশি হতেন আম্বেদকর।’
তাঁর এই বক্তৃতা চলাকালীনই সোনিয়ার নেতৃত্বে সংসদভবন চত্বরে অম্বেডকরের মূর্তির কাছে হাতে ‘গণতন্ত্রের হত্যা বন্ধ হোক’ ব্যানার নিয়ে জড়ো হন কংগ্রেস, শিবসেনা-সহ একাধিক বিরোধী দলের নেতারা। মহারাষ্ট্রে সংবিধান লঙ্ঘন, রাতারাতি রাষ্ট্রপতি শাসন প্রত্যাহার এবং বিজেপির নেতৃত্বে সরকার গঠন নিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তাঁরা।
দলনেত্রী সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ-সহ একাধিক কংগ্রেস নেতা ওই বিক্ষোভে যোগ দেন। বিক্ষোভে শামিল হন শিবসেনার অনিল দেশাই, অরবিন্দ স্বামী থেকে শুরু করে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় -সহ তৃণমূলের একঝাঁক সাংসদ। মহারাষ্ট্রের গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেন তাঁরা। সেখানে সংবিধানের প্রস্তাবনাও পাঠ করেন সোনিয়া।
অভিনব এই বিক্ষোভ কর্মসূচীর নেপথ্যে অবশ্য রয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল আগেই জানিয়েছিল, রাজ্যপাল ধানকড়ের তথাকথিত ‘এক্তিয়ার বহির্ভূত’ কাজের প্রতিবাদ জানিয়ে সংবিধান দিবসে ধর্নায় বসবেন দলীয় সাংসদরা। শীর্ষ দুই কংগ্রেস নেতা ও সাংসদ আহমেদ প্যাটেল ও গুলাম নবি আজাদ বিষয়টি জানতে পারেন। তাঁরাই বিষয়টি পৌঁছে দেন কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের কাছে। এরপরই সিদ্ধান্ত হয় রাজ্যপাল কোশিয়ারির নানা সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে মঙ্গলবার বিক্ষোভ দেখাবে দল।