যতদিন যাচ্ছে মানুষ ততই ব্যস্ত হয়ে উঠছে নিজেকে নিয়ে। আর দিনে দিনে হারিয়ে ফেলছে মানবিকতা। মানুষ আজকাল মানুষের বিপদ দেখলেই পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছে ব্যস্ততার দোহাই দিয়ে। এমনকি দায়িত্ব থেকে পিছু হাঁটছে মানুষ। অনেক বেশি নিজেকে কেন্দ্র করেই নিজেদের জীবন সাজাচ্ছেন। সমাজের এইরকম চিত্র যখন সর্বত্র, তখন কিছু অন্যরকম চিত্র ভাবায় মানুষকে। সেই রকমই এক ঘটনা দেখা গেল মুম্বইয়ে। নিজের চাকরির কথা ভুলে দায়িত্ববান নাগরিকের মতো একটি শিশুর প্রাণ বাঁচালেন এক জোম্যাটো কর্মী। তাঁর মহৎ কাজের প্রশংসায় মুখর গোটা নেটদুনিয়া।
প্রসঙ্গত, গত ১৫ নভেম্বর মুম্বইয়ের ভিমানগরে ক্রেতার বাড়িতে খাবার পৌঁছে দিতে যাচ্ছিলেন জোম্যাটোর ডেলিভারি এক্সিকিউটিভ রবি ধাওকরে। যাওয়ার পথে তিনি দেখেন অসহায় মুখে এক ব্যক্তি তাঁর কন্যাসন্তানকে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। মুখ দেখেই রবি বুঝতে পারেন নিশ্চয়ই কিছু একটা হয়েছে। তড়িঘড়ি ওই ব্যক্তির কাছে এগিয়ে যান তিনি। এরপরই ওই ব্যক্তি গোটা ঘটনার বর্ণনা দিতে থাকেন। তাতেই রবি বুঝতে পারেন দেবেন্দ্র নামে বছর আটত্রিশের ওই ব্যক্তি নাসিকে বেড়াতে এসেছেন। কোলে থাকা কন্যাসন্তানকে খাবার খাওয়াতে গিয়েছিলেন। কিন্তু খাবার গলায় আটকে যায়। সাত মাসের দুধের শিশুর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। অপরিচিত এলাকায় সন্তানকে কোলে করে খোঁজখবর নিয়ে দেবেন্দ্র জানতে পারেন কাছেই একটি হাসপাতালে রয়েছে। কিন্তু ওই হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়ার মতো কাউকে না পেয়ে অসহায় অবস্থায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে রয়েছেন। একথা শোনার পর আর এক মুহূর্ত সময় নষ্ট করেননি জোম্যাটো কর্মী রবি। তড়িঘড়ি দেবেন্দ্রকে বাইকে চাপিয়ে নেন। খুব কম সময়েই একরত্তি এবং তার বাবাকে নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছে যান রবি। চিকিৎসার পর আপাতত সুস্থ ওই দুধের শিশু।
ডেলিভারি এক্সিকিউটিভ রবির মানবতা অবাক করেছে জোম্যাটোর প্রতিষ্ঠাতা দিপিন্দর গোয়েলকে। রবির কাজের কথা উল্লেখ করে টুইট করেন তিনি। তারপর থেকেই নেটদুনিয়ায় প্রশংসা কুড়োচ্ছেন রবি। নেটিজেনরা বলছেন, পেশাগত সাফল্যের থেকে মানবতাই যে আসল, তাই যেন প্রমাণ করে দিয়েছেন ওই জোম্যাটো এক্সিকিউটিভ। আর দৃষ্টান্ত তুলে ধরেছে স্বার্থান্বেষী মানুষের কাছে।