কেন্দ্রের মোদী সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর অভিযোগ উঠেছে বহুবার। এবার মোদী এবং অমিত শাহের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহীতার অভিযোগ আনল কংগ্রেস। কারণ জানা গেছে দাউদ ঘনিষ্ঠ ৩ সংস্থার বিপুল চাঁদা গ্রহণ করেছে। পরোক্ষে মুম্বই হামলার মূল চক্রীর থেকে এভাবে টাকা নেওয়াকে সকলেই অত্যন্ত নিন্দনীয় বলেছেন।
কংগ্রেসের অভিযোগ, মোদী ক্ষমতায় আসার পর ২০১৪ সালে মুম্বই বিস্ফোরণে অভিযুক্ত ইকবাল মির্চির সঙ্গে জড়িত তিনটি সংস্থা বিজেপিকে ১০ কোটি, ৭.৫ কোটি ও ২ কোটি টাকা চাঁদা দিয়েছে চাঁদা দিয়েছে। এই তথ্য তুলে ধরে কংগ্রেসের রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা আজ অমিত শাহের উদ্দেশে প্রশ্ন করেন, ‘‘এটা দেশদ্রোহ নয়? এটাই কি তবে মিথ্যা জাতীয়তাবাদ?’’
মুম্বই হামলায় অন্যতম চক্রী মৃত ইকবাল মেমন ওরফে ইকবাল মিরচির সঙ্গে ব্যবসা করত যে সংস্থা সেই আরকেডব্লুউ ডেভলপারস লিমিটেডের কাছ থেকেই বিপুল অর্থ অনুদান হিসেবে নিয়েছে বিজেপি। ২০১৪ সালে প্রায় ১০ কোটি টাকা বিজেপিকে দিয়েছে ওই সংস্থা। তবে সেটা খাতায়–কলমে। হিসেব বহির্ভূতভাবে কত টাকা বিজেপিকে দেওয়া হয়েছে জানা যায়নি। নির্বাচন কমিশনকে বিজেপি জানিয়েছে, আরকেডব্লুউ ডেভলপারস লিমিটেডের কাছ থেকে ২০১৪ সালে তাঁরা অনুদান নিয়েছে।
আজ সকালে সংসদের গান্ধী মূর্তির সামনে কংগ্রেস বন্ড-কেলেঙ্কারি নিয়ে বিক্ষোভ দেখায়। রাজ্যসভায় বিষয়টি উত্থাপন করতে গেলে চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডু থামিয়ে দেন। অভিযোগের কোনও ‘রেকর্ড’ রাখা হয়নি। মন্ত্রীদেরও জবাব দিতে বারণ করেন। তখনও পর্যন্ত কংগ্রেসের হাতে যে তথ্য এসেছিল, তাতে প্রসঙ্গ ছিল শুধু দুর্নীতির— অর্থ মন্ত্রকের আপত্তি উড়িয়ে প্রধানমন্ত্রীর দফতর কর্নাটকের বিধানসভা ভোটের আগে নতুন বন্ড কেনার সুযোগ করে দিয়েছে। তথ্য জানার অধিকার আইনে দেখা যাচ্ছে, ১৫ দিনের মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার পরেও ১০ কোটি টাকার বন্ড গ্রহণের জন্য চাপ দেওয়া হয়েছে স্টেট ব্যাঙ্ককে।
উল্লেখ্য, আজ সন্ত্রাসের অর্থ চাঁদা নেওয়ার অভিযোগ আসার পরেও বিজেপি কোনও সাংবাদিক বৈঠক করে আনুষ্ঠানিক ভাবে অভিযোগ খণ্ডন করেনি। কংগ্রেসের এক নেতার মন্তব্য, ‘‘কোন মুখে খণ্ডন করবে? হিসেব তো খোদ বিজেপিই দিয়েছে। আর সেই হিসেব ২০১৭ পর্যন্ত। ২০১৮-য় চালু হয় নির্বাচনী বন্ড। এর পর থেকে বন্ডের মাধ্যমে গোপনেই সন্ত্রাসের টাকা নেয় বিজেপি। বিদেশের টাকাও আসতে পারে। আগে টাকা নেওয়ার সীমা ছিল, এখন তো তা-ও নেই।’’
শুধু এটাই নয়, এছাড়াও নাম এসেছে সানব্লিঙ্ক নামে আরও একটি সংস্থার। এরাও ইকবাল মিরচির কাছ থেকে সম্পত্তি কিনেছিল একসময়। আর সংস্থার ডিরেক্টর ছিলেন মেহুল অনিল বাভিসি, যিনি আবার স্কিল রিলেটরস প্রাইভেট লিমিটেড নামে আরও একটি সংস্থার ডিরেক্টর পদে আসীন ছিলেন। দেখা গিয়েছে, ওই স্কিল রিলেটরস প্রাইভেট লিমিটেড বিজেপিকে ২০১৪–১৫ সালে ২ কোটি টাকা আর্থিক অনুদান দিয়েছে। অর্থাৎ ঘুরপথে আন্ডারওয়ার্ল্ডের টাকাই বিজেপির তহবিলে ঢুকেছে। এমনটাই অভিযোগ উঠেছে।
প্রিয়াঙ্কা গান্ধী আজ টুইটে পীযূষের সাংবাদিক বৈঠককে কটাক্ষ করে প্রশ্ন তোলেন, ‘‘এক মন্ত্রী কাগজ পড়ে গেলেন। কিন্তু এই সব প্রশ্নের জবাব কী? ১) নির্বাচনী বন্ড চালু করার ক্ষেত্রে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ও নির্বাচন কমিশনের আপত্তি কি উপেক্ষা করা হয়েছে? ২) প্রধানমন্ত্রী কি কর্নাটকে ভোটের আগে বেআইনি ভাবে বন্ড কেনার অনুমতি দিয়েছেন? ৩) চাঁদা দেওয়া ব্যক্তির পরিচয় গোপনীয়, এটি কি মিথ্যা বলেছে সরকার?’’