নির্বাচনী বন্ড নিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে বিঁধতে আসরে নামল কংগ্রেস। ২০১৭ সালে চালু হওয়া নির্বাচনী বন্ড বন্ধ করে দেওয়ার দাবি করেছে কংগ্রেস। সরব হয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। এবার নির্বাচনী বন্ড প্রকল্পকে একটি ‘বিশাল কেলেঙ্কারি’ আখ্যা দিয়ে অবিলম্বে এটি বন্ধের দাবি জানাল কংগ্রেস। উল্লেখ্য, এই বন্ড নিয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্কেরও আপত্তি ছিল।
কংগ্রেসের অভিযোগ, নির্বাচনী বন্ড আসলে টাকা দাও, সুবিধা নাও— এমন লেনদেনের ব্যবস্থা ছাড়া কিছু নয়। বিজেপি স্বচ্ছতার কথা বলে। কাজে করে ঠিক উল্টো। কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধী টুইটে লেখেন, ‘কালো টাকা দূরীকরণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে বিজেপি, অথচ তা দিয়েই নিজেদের ভাঁড়ার ভরাতে ব্যস্ত তারা! এ তো জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা!’ এরপর মঙ্গলবার নির্বাচনী বন্ড নিয়ে কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা বলেছেন, ‘নির্বাচন কমিশন, বিরোধী দল, সংসদ এবং দেশবাসীকে ধোঁকা দেওয়া হয়েছে। ধরা পড়লে জবাব দেওয়ার পরিবর্তে চুপ বিজেপি!’
নির্বাচনী বন্ডের বৈধতা নিয়ে মামলা চলছে সুপ্রিম কোর্টে। এই বন্ড নিয়ে গোড়া থেকেই আপত্তি জানিয়ে আসছে বিরোধীরা। অভিযোগ উঠেছে, এই বন্ড নিয়ে নির্বাচন কমিশন যে আপত্তি জানিয়েছিল, সেই বিষয়টি নরেন্দ্র মোদীর সরকার চেপে যায় সংসদে। সংসদে অসত্য বলার জন্য মন্ত্রীর বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছিল অধিকার ভঙ্গের প্রস্তাব। তড়িঘড়ি তা-ও ধামাচাপা দেয় সরকার। তথ্যের অধিকার আইনে এক প্রাক্তন সেনাকর্মীর প্রশ্নের সূত্রে পাওয়া তথ্যের সূত্রে সামনে এসেছে বিষয়টি।
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের আপত্তি সত্ত্বেও চালু হয় নির্বাচনী বন্ড। তথ্যের অধিকার আইনে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের আপত্তি সম্বলিত চিঠিও প্রকাশ্যে এসেছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জানিয়েছিল, নির্বাচনী বন্ডের ফলে অর্থ নয়ছয় আরও বাড়বে, এবং সেই সঙ্গে ব্যাঙ্ক নোটের বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট হবে। প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর কটাক্ষ, ‘ঘুষ আর অবৈধ কমিশন হল নতুন ভারতের নির্বাচনী বন্ডের নামান্তর!’
কংগ্রেসের অভিযোগ, কালো টাকাকে বিজেপির তহবিলে টানার লক্ষ্যেই সব নিয়ম উপেক্ষা করে মোদি সরকার নির্বাচনী বন্ডের ফন্দি আঁটে। তাদের দাবি, নির্বাচনী বন্ডে বিনিয়োগকারীদের নাম ও বিনিয়োগের পরিমাণও প্রকাশ করতে হবে। নির্বাচনী বন্ড নিয়ে রিজার্ভ ব্যঙ্ককে ভুলপথে চালনা করার অভিযোগও তুলেছে কংগ্রেস। মঙ্গলবার কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ নির্বাচনী বন্ড তুলে দেওয়ার দাবি করে টুইটে লেখেন, ‘মোদী সরকার অর্থ তছরুপে কেবল আরবিআইকে এড়িয়ে যায়নি, নির্বাচন কমিশনের কড়া আপত্তিও উপেক্ষা করেছিল। তারপরে সংসদে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী সাহসিকতার সঙ্গে মিথ্যা বলে গেছেন! নির্বাচনী বন্ড বন্ধ করা হোক।’