মঙ্গলবারই দলীয় মুখপত্র সামনাতে তাদের বিজেপির বিরুদ্ধে ফের তোপ দেগেছে শিবসেনা। তাদের প্রাচীনতম জোটসঙ্গীকে এবার ত্রয়োদশ শতকের হানাদার সুলতান মহম্মদ ঘোরির সঙ্গে তুলনা করেছে উদ্ধব ঠাকরের দল। কিন্তু এরপরও সেনাকে নিয়ে সংশয় কাটছে না কংগ্রেসের। শরদ পাওয়ারের দল এনসিপিরস আশঙ্কা, শেষ পর্যন্ত বিজেপির সঙ্গে রফা হয়ে যেতে পারে শিবসেনার। যে কারণে ধীরে চলো নীতি নিয়েছেন পাওয়ার। এই পরিস্থিতিতে ন্যূনতম অভিন্ন কর্মসূচীর প্রশ্নে দিল্লীতে গতকাল কংগ্রেস-এনসিপির বৈঠক বাতিল হয়।
অন্যদিকে, শিবসেনা আবার আগামী শুক্রবার দলের সাংসদ-বিধায়কদের বৈঠক ডেকেছে। যেখানে দলীয় নেতাদের নিয়ে সরকার গড়া নিয়ে ফের এক প্রস্ত আলোচনায় বসবেন উদ্ধব ঠাকরে। ফলে দিল্লীতে সোমবার সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে বৈঠকের পরে জোট প্রশ্নে যে সংশয় তৈরি করেছিলেন পাওয়ার, সেই মেঘ কাটার বদলে তা আরও গাঢ় হয়েছে। মুখে শিবসেনা বলছে, পাওয়ারের জোটে আসা নিয়ে সশংয় নেই। ডিসেম্বরেই সেনার নেতৃত্বে সরকার হবে। তবে তাদের সন্দেহ, এনসিপি যাতে তাদের সঙ্গে জোট না গড়ে, বিজেপি সেই চেষ্টা চালাচ্ছে তলে তলে।
কংগ্রেস সূত্র জানিয়েছে, সোমবারের বৈঠকে সোনিয়া-শরদ, দুই নেতাই সেনার প্রকৃত অবস্থান নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন। শরদ-ঘনিষ্ঠ কয়েক জন এনসিপি নেতা মনে করেন, এনডিএ থেকে বেরিয়ে এলেও বিজেপির সঙ্গে সরকার গড়ার চেষ্টা সেনা চালিয়েই যাচ্ছে। বিজেপি যদি মুখ্যমন্ত্রী পদের অর্ধেক মেয়াদ শিবসেনাকে ছাড়তে রাজি হয়, সে ক্ষেত্রে অমিত শাহের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গড়তে সমস্যা নেই উদ্ধবের। সে কারণেই পাওয়ার আপাতত ধীরে চলো নীতি নেওয়ার পক্ষপাতী বলে মনে করছেন রাজনীতির লোকজন।
কংগ্রেস সূত্রের মতে, সোনিয়াও তাড়াহুড়ো করে শিবসেনার মতো দলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পক্ষপাতী নন। যদিও শিবসেনার মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত বলেন, ‘পাওয়ার ও আমাদের জোট নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই সেনার নেতৃত্বে জোট সরকার শপথ নেবে।’ কিন্তু পাওয়ারই তো সোমবার সেনার সঙ্গে সরকার গড়া নিয়ে সংশয় তৈরি করেছেন! ‘শরদ পওয়ার কী বলতে চেয়েছেন, তা বুঝতে অন্তত একশো বার জন্মাতে হবে।’ দাবি রাউতের।
দিন কয়েক ধরেই প্রকাশ্যে বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে চলেছে শিবসেনা। রাউতের বক্তব্য, শিবসেনা যাতে সরকার গড়তে না-পারে তার জন্য প্রবল ভাবে তৎপর বিজেপি। সরকার গড়তে কংগ্রেস-এনসিপি উভয়েরই সমর্থন প্রয়োজন সেনার। এই পরিস্থিতিতে পওয়ারের দল যাতে শিবসেনাদের জোটের শরিক না হয়, তার জন্য তলে তলে এনসিপি নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে বিজেপি নেতারা। সেনা সূত্রের মতে, কয়েক জন এনসিপি নেতার বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির তদন্ত চলছে। এনসিপিকে বাগে আনতে সেই মামলাগুলিকে হাতিয়ার করার কৌশল নিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব।