নির্বাচনের উত্তাপ যত বাড়ছে, দিন যত এগোচ্ছে ততই ঝাড়খণ্ড সহ জাতীয় রাজনৈতিক মহলে ঘুরছে রাম মন্দির গঠনের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের লাভ কতটা বিজেপি নিজেদের দিকে আনতে পারবে। অযোধ্যায় রাম মন্দির গঠনের ঐতিহাসিক মামলার ততোধিক ঐতিহাসিক রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সেই রায়ের পরেই রাজনৈতিক শক্তির পরীক্ষা দিতে বিজেপিকে নামতে হবে ঝাড়খণ্ডেই।
একদিকে এই ইতিবাচক রায়, অন্য দিকে বেকারত্ব, কর্মহীনতা, মানুষ কোনদিকে ঝুঁকবেন সেটাই দেখার। জোট ঘোঁটের এই রাজনীতির মধ্যে লক্ষণীয় গত বিধানসভা নির্বাচনের হিসেব। ৮১টি আসনের মধ্যে ৪৪টি গিয়েছিল এনডিএ অনুকূলে। আর বিরোধী শিবিরে ছিল ২২টি আসন। তার মধ্যে একা জেএমএমের দখলে ১৬টি। এবারে বিজেপির ফলাফল আটকে রয়েছে স্থানীয় রাজনৈতিক দলগুলির সাফল্যের উপরেই। তবে তারই মধ্যে বড় প্রশ্ন রাম মন্দির নাকি কর্মহীনতার ইস্যু কোনটা প্রভাব ফেলবে বেশি।
আগামী ৩০ নভেম্বর শুরু ভোট। পাঁচটি পর্বের এই নির্বাচনে রাজ্যের ৮১টি বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটাররা তাঁদের রায় জানিয়ে দেবেন। নির্বাচনে প্রধান দুই প্রতিপক্ষ সরকার চালানো বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ আর বিরোধী কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে হওয়া ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা, আরজেডি দলের মহাজোট।
পশ্চিমবঙ্গ লাগোয়া হওয়ায় ঝাড়খণ্ডে বাঙালিদের সংখ্যা বেশি। তাদের মধ্যে বাংলার রাজনীতি প্রভাব ফেলে। বিশেষ করে দুই রাজ্যের সীমান্তে থাকা বিধানসভায়। তবে এসব ছাড়িয়ে বিহার কেটে তৈরি হওয়ার ২০ বছরের মাথায় ঝাড়খণ্ডের রাজনৈতিক সমীকরণে মূল লড়াইটা সেই এনডিএ বনাম মহাজোট। সেখানেও শুধু ধর্ম নিয়ে বিভেদ ও ধর্মের রাজনীতি বা স্বৈরতন্ত্রের প্রভাব পড়বে না বলেই মনে করছে মানুষ। কারণ শুধু মাত্র প্রতিশ্রুতি একমাত্র সম্বল নয়, সেভাবে উন্নয়ণের জন্য কাজ করা প্রয়োজন যা বিজেপি সরকারের প্রথম গুরুত্বের মধ্যে পড়ে না।
এদিকে, বিধানসভা নির্বাচনের আগে তাই সুযোগটি ব্যবহার করতে হাতে হাত মিলিয়ে নেয় কংগ্রেস ও জেএমএম। পরিস্থিতি বুঝে যোগ দেয় আরজেডি। আর এনডিএ শিবিরের আসন বন্টনের বীতশ্রদ্ধ হয়ে জোট ছেড়ে আলাদা লড়াইয়ের পথে শরিকরা। অন্যতম আরও এক শরিক অল ঝাড়খণ্ড স্টুডেন্টস ইউনিয়নের সঙ্গেও চলছে তীব্র মন কষাকষির পালা। সংগঠন ভোট ব্যাংক দেখে যেনতেন প্রকারে তাদের সঙ্গে নিতে মরিয়া বিজেপি।