শনিবার রাতে দুর্গাপুরের মানকরে ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হয় বিধানচন্দ্র রায়ের আবক্ষ মূর্তি। ঘটনায় অভিযোগের আঙুল উঠেছে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীদের দিকে। রবিবার সকালে মূর্তিটি ভাঙা অবস্থায় দেখতে পান বাসিন্দারা। ঘটনার সমালোচনায় মুখর গোটা বাংলা।
বিধান রায়ের মূর্তি ভাঙার এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে তৃণমূল। পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এই ঘটনায় সরাসরি বিজেপিকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন। তাঁর বক্তব্য, “যে শক্তি এখন ভারত শাসন করছে, তারা এখানকার কৃষ্টি, সংস্কৃতি জানে না। ঋষি-মুনিদের সম্মান দিতে জানে না। তাই বিদ্যাসাগর, তারপর বিধানচন্দ্র রায় এমন চলতেই থাকবে। বাংলারই কিছু মানুষ এদের সমর্থন করছে। আমরা যদি সবাই বয়কট করি, তাহলে এই শক্তি আর আসবে না। আমরা তো এমন করিনি। মার্কস, লেনিনের মূর্তি তো ভাঙিনি।”
মূর্তি ভাঙার নিন্দা করে গলসির তৃণমূল বিধায়ক অলোক মাঝি বলেন, ‘‘এর বিরুদ্ধে কংগ্রেসের আন্দোলনে আমাদের সমর্থন থাকবে।’’ তৃণমূলের গলসি ১ ব্লক সভাপতি জাকির হোসেনও বলেন, ‘‘অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনা। প্রশাসন যথাযথ তদন্ত করে ব্যবস্থা নিক।’’ অখিল ভারতীয় কংগ্রেস কমিটির সদস্য দেবেশ চক্রবর্তী জানান, “বাংলাজুড়ে মনীষীদের মূর্তি ভাঙা একটা কালচারে পরিণত হয়েছে। যারা দিল্লিতে ক্ষমতায় আছে ও এই রাজ্যে শাসকদলের সহযোগিতায় ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন দেখছে, সেই বিজেপির দুষ্কৃতীরাই এই কালচারের আমদানি করেছে বাংলায়। বিধান রায় কোনও রাজনৈতিক নেতা নন। বাংলার সংস্কৃতি যারা অপমান ও কলুষিত করছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”
দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে মানকর স্টেশন রোড অবরোধ করেন কংগ্রেস নেতা-কর্মীরা। দলের মানকরের নেতা জয়গোপান দে অভিযোগ করেন, এ ভাবে এক জন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর মূর্তি ভাঙা চূড়ান্ত লজ্জার বিষয়। অবিলম্বে দোষীদের গ্রেফতার না করা হলে বড় আন্দোলনের ডাক দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা। প্রায় দেড় ঘণ্টা রাস্তায় বসে স্লোগান দিতে থাকেন কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকেরা। পুলিশ এসে তাঁদের আশ্বস্ত করার পরে অবরোধ ওঠে। এ দিন মূর্তি রাখার জায়গাটি কালো কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখেন কংগ্রেস কর্মীরা।