দ্বিতীয় মোদী সরকারের পেশ করা কেন্দ্রীয় বাজেটে চলতি আর্থিক বছরের জন্য ১ লক্ষ কোটি টাকার আর্থিক ঘাটতির লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছিল। যা জিডিপির ৩.৩ শতাংশ। কিন্তু প্রত্যাশা মতো আয় না হওয়ায় সেপ্টেম্বরের শেষে কেন্দ্রের আর্থিক ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬.৫২ লক্ষ কোটি। অর্থাৎ চলতি অর্থবছরের প্রথম ছ’মাসেই বাজেট লক্ষ্যমাত্রার ৯২.৭ শতাংশে পৌঁছেছে রাজকোষ ঘাটতি। যা নিয়ে এবার ফের কাঠগড়ায় কেন্দ্র। রাজকোষ ঘাটতি নিয়ে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন তথা কেন্দ্রকে তোপ দেগে এনডিএ জমানার প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী যশবন্ত সিনহা বলেন, বাজেটের তথ্যে কারচুপি করেছেন নির্মলা। যার আড়ালে রাজকোষ ঘাটতির আসল অঙ্ক লুকিয়ে রেখেছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি এই ইঙ্গিত দিয়েছেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজনও। মোদী সরকারের বিরুদ্ধে রাজকোষ ঘাটতির আড়ালে অনেক কিছু ধামাচাপা দিয়ে রাখার অভিযোগ তুলেছিলেন রাজন। যে ঘাটতির তথ্য দেখানো হচ্ছে, কার্যত তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাঁর আশঙ্কা ছিল, আসলে সেই অঙ্ক অনেক বেশি। সঙ্গে হুঁশিয়ারি, সম্ভবত এই বিষয়টিই উদ্বেগজনক অবস্থার দিকে ঠেলে দিচ্ছে দেশকে। আবার, দিন কয়েক আগে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারতীয় অর্থনীতি ও তার ভবিষ্যৎ নিয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর বিরল আচার্যও বলেছিলেন, মোদী সরকারের ‘অজুহাত’ ধরতে রাজকোষে নজরদারি চালানোর ব্যবস্থা করা উচিত।
রবিবার মুম্বইয়ে সাহিত্য সম্মেলনে যশবন্তের দাবি, ৫ জুলাই পূর্ণাঙ্গ বাজেট ঘোষণায় রাজকোষ ঘাটতি লক্ষ্য জিডিপির ৩.৩ শতাংশে বাঁধেন নির্মলা। অথচ সিএজি ততদিনে ঘাটতি আরও বেশি হবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে। যশবন্তের অভিযোগ, রাজস্ব আদায় তখন এতটাই খারাপ ছিল যে, সেটা স্বীকার করে নিলে ঘাটতিকে ৩.৩ শতাংশ বলে দাবি করা নির্মলার পক্ষেও সম্ভব হত না। অন্যদিকে, সাধারণ মানুষের খরচ কমা নিয়ে এনএসও-র তথ্য অস্বীকার করা প্রসঙ্গে তোপ দেগে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের কটাক্ষ, ‘বেকারত্বের পরিসংখ্যান ধামাচাপা দিয়েছিল কেন্দ্র। এ বার ব্যয়ের হিসেবও চাপা দিচ্ছে। কেন্দ্র এ ভাবেই তথ্যের অধিকার আইন মানে।’