ভারত-মার্কিন সম্পর্ক উন্নতির শিখরে পৌছলেও, দেশের বিরোধী দলগুলির পাশাপাশি জাতীয় নাগরিকপঞ্জী বা এনআরসিকে সহজভাবে নিচ্ছে না মিত্র দেশ আমেরিকা। ভারতকে উদ্দেশ্য করে সেটাই স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিল আমেরিকার আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা কমিশন। তাদের স্পষ্ট দাবি, ‘শুধুমাত্র সংখ্যালঘুদের দেশছাড়া করতেই আসামে এনআরসি তালিকা করেছে ভারত সরকার।’
আসাম থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের হঠাতে দীর্ঘদিনের দাবি মেনে সম্প্রতি সেখানে এনআরসি তালিকা প্রকাশ করে সরকার। যে তালিকা থেকে বাদ পড়েছে ১৯ লক্ষ বাঙালির নাম। এই ঘটনায় চিন্তিত আসামের পাশাপাশি গোটা দেশ। পরিকল্পনা রয়েছে আসামের পাশাপাশি গোটা দেশজুড়ে এই এনআরসি লাগু করার। এই প্রসঙ্গেই ইউএসসিআইআরএফ এক বিবৃতিতে বেশ নিন্দা করল ভারতের। জানানো হল, ‘আসামের বাঙালি মুসলিম সম্প্রদায়কে তছনছ করে দিতেই এই এনআরসি ভাবনা। একইসঙ্গে একটি ধর্মীয় ভাবনাকে সেখানে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। যাতে বিপুল সংখ্যক মুসলিমকে দেশছাড়া করা যায়।’
এর পাশাপাশি আমেরিকার তরফে আরও জানানো হয়েছে, ‘সরকারের এই পদক্ষেপ ভারতে মুসলিম বিরোধিতাকে প্রত্যক্ষভাবে তুলে ধরে।’ একইসঙ্গে তাঁদের দাবি, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের টার্গেট করার হাতিয়ার এই এনআরসি। বিশেষত, ভারতীয় মুসলমানদের এভাবে রাষ্ট্রহীন করে তোলা এটাই প্রমাণ করে ভারতের অভ্যন্তরে ধর্মীয় স্বাধীনতার অবস্থান নিম্নগামী।’
উল্লেখ্য, ভারতের মাটিতে বিশেষ করে আসামে এনআরসির দাবি ছিল দীর্ঘদিনের। মোদী সরকারের আমলে শীর্ষ আদালতের অনুমতি নিয়ে ঘটে তার বাস্তবায়ন। জানানো হয়, ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চ পর্যন্ত যারা বাংলাদেশ থেকে ভারতে ঢুকেছিলেন তাঁদের ভারতীয় নাগরিক হিসাবে বিবেচনা করা হবে। এরপর যারা এদেশে ঢুকেছেন তাঁদের ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হবে। সরকারের এই এনআরসি নীতিতে দেশছাড়া হওয়ার শনি ঝুলছে ১৯ লক্ষ বাঙালির শিয়রে।