ঘূর্ণিঝড় বুলবুল এখন অতীত। ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরেছে শহর কলকাতা ও শরহরতলি। কিন্তু বিভিন্ন বিধ্বস্ত এলাকায় বুলবুলের ধ্বংস লীলার তাণ্ডবের ছাপ এখনও স্পষ্ট। বুলবুল ঘূর্ণিঝড়ের জেরে মৃত্যুর পাশাপাশি বাড়ি-ঘর ভেঙেছে অনেক গরীব পরিবারের। ফলে পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে স্বজন হারানোর পাশাপাশি ভিটেমাটি হারানোর ব্যথা এখনও দগদগে। রবিবার বুলবুলের তাণ্ডবলীলা চালানোর পরে সোমবারই ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ছুটে গেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুলবুলের তাণ্ডবে মৃতদের পরিবারকে দু’ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এবার দুর্গতদের সাহায্য করার জন্যে আরও এক পদক্ষেপ নিল প্রশাসন। বুলবুলে ক্ষতিগ্রস্তদের হাতে তুলে দেওয়া হবে ডিগনিটি কিট।
নবান্ন সূত্রের খবর, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের দাপটে ক্ষতিগ্রস্ত ৬ লক্ষ পরিবারকে রাজ্য সরকারের তরফে দেওয়া হবে এই ‘ডিগনিটি কিট’ বা ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট কিট। এই কিটে থাকছে ত্রিপল, ২টো শাড়ি, লুঙ্গি, ধুতি, বাচ্চাদের পোশাক, চাদর, শুকনো খাবার, স্টোভ বাসন-সহ দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার্য নানা জিনিস। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশমতো এই বিশেষ কিট পৌঁছে যাবে দুর্গতদের কাছে।
বুধবার বসিরহাটে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আকাশপথে বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শন করার পর প্রশাসনিক বৈঠকও সারেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই মমতা বলেন, তিনি বলেন, “নজর দিন ত্রাণ নিয়ে যেন কারও ক্ষোভ না থাকে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শুকনো খাবার, দুধ দুর্গতদের হাতে তুলে দিন। ত্রাণ নিয়ে কোনও রাজনীতি যেন না হয়। সবাই যাতে ত্রাণ পায় তা দেখতে হবে।”
দুর্যোগের কবলে পড়া অভাবী মানুষগুলিকে যাতে নতুন করে শুরু করতে কোনও সমস্যার সম্মুখীন না হতে হয়, সেকথা ভেবেই এই বিশেষ কিট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। অন্যদিকে বুধবারই শোনা গিয়েছে, বুলবুলে বিধ্বস্ত এলাকাগুলির ছাত্রছাত্রীদের কথা মাথায় রেখে এক সপ্তাহের জন্য পিছিয়ে গেল বার্ষিক পরীক্ষা। ডিসেম্বরেই বার্ষিক পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বছরের প্রায় শেষ পর্যায়ে এসে পরীক্ষার মুখোমুখি এমন ঝড়ে সব তছনছ হয়ে যাওয়াতেই পরীক্ষা পিছনোর সিন্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার, জানা গিয়েছে সূত্রের খবরে।