বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে মোদী সরকারের বাজেটে যেমন তেমন কোনও উদ্যোগ চোখে পড়েনি। ঠিক তেমনই চাহিদার মানোন্নয়নেও কোনও ইতিবাচক পদক্ষেপ নিতে পারেনি কেন্দ্র। আর এই দুই কারণেই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে ভারতের শিল্প সংস্থাগুলোকে। চাপের মুখে কেন্দ্র এখন পদক্ষেপ করার কথা ঘোষণা করলেও তার সুফল এখনও পর্যন্ত দেখতে পায়নি অর্থনীতি। উল্টে একের পর এক পরিসংখ্যান ক্রমাগত চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে যাচ্ছে, কমে যাওয়া তো অনেক দূরের কথা, দিনকে দিন যেন আরও জাঁকিয়ে বসছে অর্থনীতির ‘অসুখ’। এই অবস্থায় টানা ষষ্ঠ বার রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সুদ ছাঁটাই কার্যত অবশ্যম্ভাবী বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। কিন্তু এরই মধ্যে উদ্বেগ আরও বাড়াল অক্টোবরের খুচরো মূল্যবৃদ্ধি। বুধবার পরিসংখ্যান মন্ত্রক জানাল, খাদ্যপণ্যের দামের কাঁধে ভর করে গত মাসে ওই হার ঠেকেছে ৪.৬২ শতাংশে। যা গত ১৬ মাসের সর্বোচ্চ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, উৎসবের মরসুমেও গাড়ি থেকে ভোগ্যপণ্যের চাহিদা বলার মতো বাড়েনি। উল্টে শিল্পোৎপাদন ও পরিকাঠামো ক্ষেত্রের পরিসংখ্যান উদ্বেগ বাড়িয়েছে। সব মিলিয়ে দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকের বৃদ্ধির হারও খুব একটা ভাল হবে না বলেই ধারণা। এই অবস্থা থেকে অর্থনীতিকে ঘুরিয়ে দাঁড় করাতে এখনও পর্যন্ত সুদ ছাঁটাইয়ের পক্ষে পাল্লা ভারী। কিন্তু খুচরো মূল্যবৃদ্ধি এই হারে বাড়লে, শীর্ষ ব্যাঙ্কের সামনেও আর কত দিন তার সুযোগ থাকবে তা নিয়েই সন্দিহান তাঁরা। বস্তুত, খুচরো মূল্যবৃদ্ধি এখনও পর্যন্ত রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ৪ শতাংশের (+/-২ শতাংশ) লক্ষ্যমাত্রার মধ্যেই রয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি তা বেড়েছে দ্রুত হারে। সেপ্টেম্বরে তা ছিল ৩.৯৯ শতাংশে। গত মাসে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ছিল ৭.৮৯ শতাংশ। আনাজ ও ফলের দাম বেড়েছে ২৬.১০ শতাংশ ও ৪.০৮ শতাংশ। ডাল, খাদ্যশস্য, মাছ-মাংস ও ডিমের ক্ষেত্রে তা যথাক্রমে ১১.৭২ শতাংশ, ২.১৬ শতাংশ, ৯.৭৫ শতাংশ ও ৬.২৬ শতাংশ।