সম্প্রতি দক্ষিণ কাশ্মীরের কুলগামে জঙ্গীদের হাতে নিহত হয়েছেন মূর্শিদাবাদের পাঁচ শ্রমিক। যা নিয়ে খুব উদ্বেগে রয়েছে বাংলার সরকারের শ্রম বিভাগ। তাই বাংলার শ্রমিকদের সুরক্ষিত করতে শ্রম দফতর কেরল, মহারাষ্ট্র এবং পাঞ্জাবের সঙ্গে মউ চুক্তি সাক্ষর করবে। যাতে বাংলার শ্রমিকরা ভিনরাজ্যে গিয়ে সুরক্ষিত থাকেন।
প্রত্যেক মাসে মালদা, মূর্শিদাবাদ, দক্ষিণ ২৪ পরগণা, মেদিনীপুর (পূর্ব ও পশ্চিম), বর্ধমান, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া থেকে বিভিন্ন সংস্থা গোটা দেশে নির্মাণ কাজের জন্য, কৃষি বা বাগানের কাজ, হাতের কাজ বা গয়না তৈরির জন্য শ্রমিক পাঠায়। রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী জাভেদ আখতার বলেন, ’অন্যান্য রাজ্যে আমাদের শ্রমিকদের উপর হামলার সাম্প্রতিক ঘটনাগুলি আমাদের জন্য গভীর উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও এটা একেবারেই প্রাথমিক স্তর, কিন্তু আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে শ্রমিকদের সুরক্ষা ও নিরাপদ করতে অন্য রাজ্যের সঙ্গে আমরা মউ চুক্তি সাক্ষর করব।’ তিনি আরও বলেন, ‘ওড়িশা, কর্নাটক এবং কেরল একে-অপরের সঙ্গে মউ চুক্তি সাক্ষর করেছে তাদের শ্রমিকদের নিরাপদে রাখতে। এই ধরনের চুক্তির আওতায় এই সাক্ষর সাহায্য করবে যদি কোনও শ্রমিক সমস্যায় থাকেন। এটা খুবই ভালো পদক্ষেপ এবং এই চুক্তির জন্য যদি নতুন কিছু হয় তারও অপেক্ষায় রয়েছি।’ সাম্প্রতিককালে ঘটে যাওয়া কাশ্মীরে শ্রমমিকদের ওপর হামলার ঘটনার পর থেকেই উপত্যকা থেকে অন্য শ্রমিকরা ফিরে আসতে শুরু করেছেন। সম্প্রতি রাজ্য সরকারের উদ্যোগে একশোরও বেশি শ্রমিক কাশ্মীর থেকে এ রাজ্যে ফিরে এসেছেন।
নিয়ম অনুসারে, শ্রমিক ঠিকাদাররা যে জেলা থেকে শ্রমিকদের অন্য রাজ্যে পাঠাচ্ছেন, সেই জেলা প্রশাসনকে জানাতে হবে কত শ্রমিককে ভিনরাজ্যে পাঠানো হল। শ্রমিকদের পরিচয়পত্র ও ঠিকানা-সহ নথি জমা দিতে হবে গ্রাম পঞ্চায়েত, লেবার কমিশন বা জেলাশাসকের দফতরে। সাগরদীঘির তৃণমূলের বিধায়ক সুব্রত সাহা বলেন, ‘রাজ্যের বড় সংখ্যক শ্রমিক অন্য রাজ্যে নিজে থেকে কাজ করার জন্য বা কোনও বেসরকারি ঠিকাদার ঝুঁকি নিয়ে শ্রমিকদের ভিনরাজ্যে কাজে পাঠায়। পঞ্চায়েত প্রধান শ্রমিকদের পরিচয় সহ ঠিকানা জমা দেওয়ার জন্য বারংবার বলেও কোনও ফল পাওয়া যায়নি।’ তিনি আরও বলেন, ‘দক্ষ ও অদক্ষ শ্রমিকদের বাংলা থেকে ভারতের যে কোনও প্রান্তে কাজের জন্য পাঠানো হয়। প্রস্তাবিত মউ এইসব শ্রমিচকদের সুরক্ষা প্রদান করবে। আমার মনে হয় মউ চুক্তি সাক্ষর হওয়া উচিত কেরল ও মহারাষ্ট্রের সঙ্গে। কারণ এই দুই রাজ্যে সবচেয়ে বেশি বাংলার শ্রমিকরা কাজের জন্য যান। যদি দরকার পড়ে তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে ব্যক্তিগত স্তরে গিয়ে এই বিষয়টি দেখবেন।’