খাপ পঞ্চায়েতের কাছে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করতে গিয়ে অবাক করা নির্দেশ পেল বিহারের মুজফফরপুরের এক নাবালিকা। ধর্ষণের জন্য ওই নাবালিকাকেই দোষী সাব্যস্ত করে খাপ পঞ্চায়েতের সদস্যরা। ক্ষতিপূরণ পেতে ধর্ষণের জেরে জন্ম নেওয়া তার সদ্যোজাতকেই বিক্রি করে দেওয়ার নির্দেশ দিল পঞ্চায়েত। ঘটনার কথা সামনে আসতেই রীতিমত ঢিঢি পড়ে গেছে চারপাশে।
ঘটনার সূত্রপাত চলতি বছরের গোড়ায়। সে সময় মুজফ্ফরপুরের স্থানীয় মসজিদে থাকত এক ধর্মগুরু মৌলানা মকবুল। ওই মেয়েটির হাত দিয়ে গ্রামের লোকজন তাকে খাবার পাঠাত। অভিযোগ, এক দিন মাদক মেশানো মিষ্টি খাইয়ে তাকে ধর্ষণ করে মকবুল। মাস দুয়েক ধরে তার অত্যাচারের শিকার হয় সে। ঘটনার কথা যাতে জানাজানি না হয়, সে জন্য মকবুল মেয়েটিকে খুনের হুমকিও দিত বলে দাবি গ্রামের এক বাসিন্দার। তবে ওই ঘটনার কথা জানতে পেরে যায় স্থানীয় এক ইলেকট্রিশিয়ান মহম্মদ শোয়েব। এর পর শোয়েবের কাছেও ধর্ষণের শিকার হয় মেয়েটি। এরপর গর্ভবতী হয়ে পড়ে ওই নাবালিকা। গত মাসে একটি সন্তানের জন্ম দেয় সে।
গত মাসে প্রসবের পর সন্তানের পিতৃপরিচয় জানতে চেয়ে অভিযুক্তদের ডিএনএ টেস্টেরও আবেদন করেছিল সে। তবে সে আবেদন খারিজ করে ওই মেয়েটিকেই দোষী সাব্যস্ত করে মসজিদের পঞ্চায়েত কমিটি। মহম্মদ সাদ্রে বলেন, ‘‘ওই মেয়েটিকে দোষী বলে আমাদের পঞ্চায়েত ওই শিশুটিকে বিক্রি করে দিতে নির্দেশ দেয়। বিক্রির টাকা ওই মেয়েটিকে নিয়ে নিতে বলেছিল কমিটি। যত দূর আমি জানি, সমস্তিপুর জেলার তাজপুরের এক পরিবারের সঙ্গে ১ লাখ টাকায় রফাও হয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত সন্তান বিক্রি হয়েছিল কি না, তা জানি না।’’
মসজিদ কমিটির কাছে বিচার চাইতে গেলে তারা তাকেই এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী করে। ক্ষতিপূরণের টাকা পেতে তার সদ্যোজাত শিশুটিকে বিক্রি করে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। এরপরই স্থানীয় থানায় যায় ওই নাবালিকা। দুই ধর্ষকের খোঁজ করছে পুলিশ।