মুর্শিদাবাদের মুরশালিম শেখ। তিন-চারদিন আগেও ফোনে কথা হয়েছিল মেয়ের সঙ্গে। আশ্বাস দিয়েছিলেন তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরবেন সঙ্গে আনবেন নতুন জামা। কিন্তু মেয়েকে দেওয়া কথা রাখা হল না। তার আগেই জঙ্গীদের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে গিয়েছেন তিনি৷ মঙ্গলবার জম্মু ও কাশ্মীরে জঙ্গীদের গুলিতে নিহত হওয়ায় ৫ জন মজদুরের একজন মুরশালিম।
মঙ্গলবার দক্ষিণ কাশ্মীরের কুলগামের কাতরাসু গ্রামে আচমকাই হামলা চালায় জঙ্গীরা। ঘরে থেকে টেনে বের করে এনে গুলি চালিয়ে মেরে ফেল পশ্চিমবঙ্গ থেকে উপত্যকায় কাজের খোঁজে যাওয়া ৫ জন শ্রমিককে। জম্মু -কাশ্মীরে বাইরে থেকে আসা ইদানীং নিশানা বানিয়েছেন জঙ্গীরা। কিছুদিন আগেই পরপর খুন হয়েছেন দুই ট্রাক চালক। খুন হয়েছেন পাঞ্জাবের এক ব্যবসায়ী এবং রাজস্থান থেকে আসা এক ঠিকা শ্রমিকও।
কুলগামে জঙ্গী হানার কথা টিভি দেখেই জানতে পেরেছিলেন সাগরদিঘীর বাসিন্দারা। তার পর থেকেই ভয়ে সিঁটিয়ে ছিল গোটা গ্রাম। এই বুঝি আসবে খারাপ খবর। হলও তাই। পুলিশ আসতেই কান্নার রোল উঠল একের পর এক বাড়িতে। শোকে পাথর হয়ে গিয়েছে গোটা গ্রাম।
মুরশালিমের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকে কেমন যেন হতবাক হয়ে গিয়েছে তাঁর মেয়ে ক্লাস এইটের ছাত্রী সুহানা খাতুন। ফুঁপিয়ে কেঁদে বারবার খালি বলে উঠছে, “বাবা কথা দিয়েছিল বাড়ি আসবে। প্রতি বছর আসার সময় আমার জন্য নতুন জামা নিয়ে আসত। এখন সবাই বলছে বাবা আর ফিরবেই না।” মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘীতে ১০ কাঠা জমি ছিল মুরশালিম শেখের। তবে ফসল ভালো হত না। এ বছরও হতাশ করেছিল জমি। প্রতি বছরের মতোই তাই চলতি মরশুমেও কাজের খোঁজে কাশ্মীর পাড়ি দিয়েছিলেন তিনি।