বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে মোদী সরকারের বাজেটে যেমন তেমন কোনও উদ্যোগ চোখে পড়েনি, তেমন চাহিদার মানোন্নয়নেও কোনও ইতিবাচক পদক্ষেপ নিতে পারেনি কেন্দ্র। আর এই দুই কারণেই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে ভারতের শিল্প সংস্থাগুলোকে। গাড়ি শিল্প থেকে বিস্কুট- সর্বত্রই বাজারে চাহিদা বাড়ন্ত। বিক্রি না হওয়ায় বন্ধ করতে হচ্ছে উৎপাদন। তলানিতে বৃদ্ধির হার। আর এসবের ফলেই অর্থনীতি দ্রুত গতিতে তলানিতে ঠেকছে। আর এসব দেখেই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন ও আইএমএফের শীর্ষ কর্তা উদ্বেগ প্রকাশ করছেন খাদের ধারে পৌঁছে যাওয়া ভারতের অর্থনীতি নিয়ে। এবার মোদী সরকারকে সতর্ক করল মূল্যায়ন সংস্থা গোল্ডম্যান স্যাক্স। বিশ্ব মন্দার ফলে এক দশক আগে ভারত যে আর্থিক সমস্যার মুখে পড়েছিল, এ বারের সমস্যা তার চেয়েও দীর্ঘ মেয়াদি বলে জানিয়েছে তারা। তাদের সতর্কবার্তা, আর্থিক বৃদ্ধিতে যে ধাক্কা লেগেছে তার অন্যতম কারণ চাহিদায় টান ঠিকই।
কিন্তু শুধু এনবিএফসিগুলির আর্থিক স্বাস্থ্য খারাপ হওয়ার ফলেই যে সাধারণ মানুষ ভোগ্যপণ্য কেনার জন্য ঋণ পাচ্ছেন না এবং তার ফলেই বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিক্রিবাটায় টান দেখা গিয়েছে— এত সহজ ভাবেও বিষয়টিকে ব্যাখ্যা করলে চলবে না। বরং সমস্যার শিকড় আরও গভীরে। চলতি অর্থবর্ষে ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির পূর্বাভাসও ছাঁটাই করে ৬ শতাংশ করেছে গোল্ডম্যান। বৃহস্পতিবার গোল্ডম্যানের মুখ্য অর্থনীতিবিদ প্রাচী মিশ্র বলেন, ‘বৃদ্ধির হার ২ শতাংশ বিন্দু কমেছে। অর্থনীতিতে এ বারে ধাক্কা অনেক দীর্ঘ মেয়াদি। অন্তত ২০ মাস ধরে চলছে। ২০০৮ সালের মন্দার মেয়াদও এত দিন ছিল না।’ গোল্ডম্যানের গবেষণা অনুযায়ী, এর পিছনে রয়েছে মূলত তিনটি কারণ। বাণিজ্য যুদ্ধের ফলে আন্তর্জাতিক অর্থনীতির সমস্যা, চাহিদায় টান এবং লগ্নি ও ঋণ বৃদ্ধির হার কমা। তবে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সুদ কমানো এবং কেন্দ্রের কর্পোরেট কর হ্রাসের কাঁধে ভর করে অর্থবর্ষের দ্বিতীয়ার্ধে বৃদ্ধির হারে গতি ফিরতে পারে বলে জানান তিনি।