২০১৪-১৫ সালে তাঁর মালিকানাধীন টেম্পল এন্টারপ্রাইজ প্রাইভেট লিমিটেড-এর বার্ষিক লাভের পরিমাণ ছিল মাত্র ১৫,০০০ টাকা। কিন্তু অমিত শাহ বিজেপি সভাপতি হওয়ার পরই শাহপুত্র জয় শাহের সংস্থার বার্ষিক লাভের পরিমাণ ১৬ হাজার গুণ বেড়ে দাঁড়ায় ৮০.৫ কোটি টাকায়। বছরখানেক আগেই যে তথ্য উঠে এসেছিল খবরের শিরোনামে। এবার বিরোধীদের তোলা দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত সেই জয় শাহকেই বসানো হল বিসিসিআই-এর সচিব পদে! যা নিয়ে ইতিমধ্যেই নেট দুনিয়ায় চলছে জোর ট্রোলিং।
যেমন নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হওয়া একটি মিমে দেখা যাচ্ছে, সৃজিত মুখোপাধ্যায় ‘ভিঞ্চি দা’ ছবিতে রুদ্রনীল ঘোষ অভিনীত চরিত্রটি বলছে, ‘সৌরভকে বিসিসিআই সভাপতি করে কখন অমিত শাহ নিজের ছেলেকে বোর্ড সচিব করে দেবেন, তা ধরতে পারবেন না।’ শাহপুত্র জয় শাহের সংস্থা যে প্রায় ১৬ হাজার গুণ সম্পত্তি বাড়িয়েছে, সে কথাও টুইটারে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন কেউ কেউ। লিখছেন, ‘জয় শাহ অমিত শাহের ছেলে বলে বিসিসিআইয়ের সচিব হয়েছেন, এমন নয়। বরং জয় শাহ এলে বিসিআইয়ের সম্পত্তি ১৬ হাজার গুণ বেড়ে যাবে, তাই তাঁকে সচিব পদে বসানো হয়েছে।’
হ্যাঁ, একদিকে যখন বঙ্গসন্তান সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ক্রিকেট বোর্ডে সভাপতি পদে স্থলাভিষিক্ত হওয়ায় বিশ্বজোড়া বাঙালি অভিনন্দনের বন্যা বইয়ে দিচ্ছে, তখন জয় শাহকে নিয়ে এভাবেই চলছে হাসি-ঠাট্টা, শ্লেষ, কটাক্ষের ঝড়। কেউ কেউ আবার ‘পরিবার রাজনীতি’ নিয়ে তোলা বিজেপির আক্রমণ ফিরিয়ে দিচ্ছেন গেরুয়া শিবিরের দিকে। জনৈক ব্যক্তি যেমন টুইটারে বলছেন, ‘জয় শাহকে সচিব পদে বসানোর বেলায় কেউ পরিবারতন্ত্রের অভিযোগ তুলবে না, এদিকে বিজেপির ভোটের ইস্যু হবে গান্ধী পরিবারের একাধিপত্য।’
গেরুয়া শিবির ভোটের মুখে ও শাসক হিসাবে একের পর এক প্রতিশ্রুতি দিলেও কাজে তা পালন করেনি। সেই তালিকা দিয়ে একজন লিখেছেন, ‘বিজেপি বলে মহিলাদের সম্মান করুন, বাস্তবে চিন্ময়ানন্দ ও সেঙ্গারকে সমর্থন করে তারা। বিজেপি বলে তারা সন্ত্রাসবাদ বিরোধী, এদিকে প্রজ্ঞা ঠাকুর দলের সাংসদ হন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলে বিজেপি ইয়েদুরাপ্পাকে মুখ্যমন্ত্রী করে। আর পরিবারতন্ত্রের বিরোধিতা করে অমিত শাহ নিজের ছেলেকে বিসিসিআইয়ের সচিব পদে বসান। এ কেমন রাজনীতি?’ একজন আবার বিজেপির নতুন নাম দিয়েছেন, ‘ভারতীয় হিপোক্রিট পার্টি।’
প্রায় সকলের লেখাতেই বারবার ফিরে এসেছে ব্যবসা ১৬ হাজার গুণ বাড়ার প্রসঙ্গ। সঙ্গে সঙ্গে কেউ লিখেছেন ক্রীড়া জগতের প্রশাসনে জয়ের অভিজ্ঞতা নিয়েও। খেলার সঙ্গে এতদিন তো তাঁর কোনও যোগাযোগ ছিল না। তাহলে হঠাৎ করে তাঁকে কেন প্রশাসক হিসাবে বসানো হল? সেই নিয়েও ঠাট্টা করেছেন কেউ কেউ।