সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, অপর্ণা সেন ও শ্যাম বেনেগালের মতো বিদ্বজনেরা দেশে ‘ক্রমবর্ধমান অসহিষ্ণুতা ও গণপিটুনির’ নিন্দা করে খোলা চিঠি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। তার জেরে সেই চিঠিতে স্বাক্ষরকারীদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল। ওই অভিযোগের কড়া বিরোধিতা করে প্রধানমন্ত্রী মোদীকেই এ বার চিঠি দিলেন তিরুঅনন্তপুরমের কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর।
সংসদের তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান থারুর চিঠিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে লিখেছেন, ‘যাঁরা আপনার সমালোচনা করেন বা আপনার মতের বিরুদ্ধ মত পোষণ করেন, তাঁদের শত্রু বা দেশ-বিরোধী মনে করার কারণ নেই। সমালোচনা ছাড়া কোনও উন্নয়নই হতে পারে না। যে সব সমস্যা দেশের নাগরিকদের পীড়িত করে, সেগুলির প্রতি আমরা যদি চোখ বুজে থাকি, তা হলে আধিপত্যবাদের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। কিন্তু দেশের সংবিধানে স্বীকৃত মূল্যবোধ আধিপত্যবাদের কথা বলে না’। ব্রিটিশ রাজের বিরুদ্ধে সকলে ভয় গুটিয়ে গিয়ে মুখ বন্ধ করে ফেললে ইতিহাসের গতিই অন্য রকম হতো বলে স্মরণ করিয়ে দিয়ে থারুর প্রশ্ন তুলেছেন, ‘এটাই কি নতুন ভারত? যেখানে নাগরিকেরা ‘মন কি বাত’ বলতে চাইলে তাঁদের ‘মৌন কি বাত’-এর দিকে ঠেলে দেওয়া হবে? এমন এফআইআর দায়েরের তীব্র বিরোধিতা করছি’। প্রতিবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়েছেন কংগ্রেসের আর এক সাংসদ, কর্নাটকের রাজীব গৌড়াও।
পরে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর উচিত এই প্রবনতার বিরুদ্ধে মুখ খোলা। ধর্মের নামেই হোক বা শিশু চুরির গুজবে, গণপ্রহার সকলের জন্যই উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটা কেমন দেশ, যেখানে উদ্বেগ জানালে এফআইআর হবে! সাংবাদিকেরা কিছু ফাঁস করলে বা সত্য উদঘাটন করলে গ্রেফতার হবেন’!