মোদী সরকারের দ্বিতীয় ইনিংস শুরুর দিনই কানাঘুষো শোনা গিয়েছিল যে এবার রেলের বেসরকারিকরণ করতে চলেছে মোদী সরকার। তারপরই সমস্ত জল্পনাকে সত্যি করে বাজেট পেশের দিনই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল যে, রেল এবং বিভিন্ন সরকারি সংস্থার বেসরকারিকরণের পথেই হাঁটতে চলেছে কেন্দ্র। ইতিমধ্যেই যা বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। এইবার আরও একটি কোপ পড়ল রেলের ওপর। বেসরকারিকরণ হল ১৫০ টি ট্রেনের।
এই প্রেক্ষিতে রেলের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে মুখ খুললেন রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান বিনোদকুমার যাদব। বললেন, অন্তত ১৫০ টি ট্রেনের বেসরকারিকরণের পরিকল্পনা নিয়েছে রেল। কোন কোন রুটে সেই ট্রেন চলবে, তা নিয়ে চলছে শেষ পর্যায়ের আলোচনা।
সূত্রের খবর, এখনও রুট নিলাম হয়নি, কিন্তু প্রাথমিকভাবে দিল্লি-মুম্বই এবং দিল্লি-হাওড়া করিডোরে এই ট্রেনগুলো চালানো হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়া আর কোন কোন রুট বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক হতে পারে, তা নিয়েও কাজ করছে ভারতীয় রেল, বলে জানিয়েছেন রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান। তাঁর কথায় ২০২৩-২৪ নাগাদ ভারতের রেল লাইনে দৌড়বে বেসরকারি ট্রেন।
রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, বেসরকারি হাতে ট্রেন চালানোর ভার দেওয়ার অনেকগুলো শর্তের মধ্যে একটি অন্যতম হল, পেশাদারি মানসিকতা। ঠিক বিমান পরিবহণের মতোই, বেসরকারি ট্রেনে ভবিষ্যতে লাগেজ ম্যানেজমেন্টকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। এমনকী বাড়ি থেকে পিকআপ এবং ড্রপ সুবিধাও দেওয়া হবে। সুতরাং যাত্রী স্বাচ্ছন্দ বাড়াতে কোনও চেষ্টারই কসুর রাখা হবে না, জানান বিনোদকুমার যাদব।
রেলের নিজস্ব সংস্থা আইআরসিটিসিকে পরীক্ষামূলকভাবে প্রথম বেসরকারি ট্রেন, তেজস এক্সপ্রেসের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এই উদ্যোগ ফলপ্রসূ হলে পরবর্তীতে আরও ১৫০ টি ট্রেন তুলে দেওয়া হবে পুরোপুরি বেসরকারি হাতে। ইকনমিক টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানিয়েছেন বিনোদকুমার যাদব। রেল বোর্ডের চেয়ারম্যানের মতে, ২০২১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে দিল্লি-মুম্বই এবং দিল্লি-হাওড়া ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডোরের কাজ। ফলে সাধারণ লাইনের উপর থেকে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত মালগাড়ির চাপ কমে যাবে পাশাপাশি গতি বেড়ে হবে প্রায় দ্বিগুণ। ওয়েটিং লিস্টের বালাই থাকবে না। এই পরিস্থিতিতে রেল যোগাযোগ ঢেলে সাজতে হবে। তাই প্রয়োজন হবে নতুন নতুন প্রচুর ট্রেনের। প্রতিটি মানুষের চাহিদা অনুযায়ী ট্রেন দেওয়ার ক্ষমতা আয়ত্ব করতেই বেসরকারিকরণের পদক্ষেপ, বলে জানান বিনোদকুমার যাদব।