অগণতান্ত্রিক ভাবে জম্মু-কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা রদ করেছে কেন্দ্রের মোদী সরকার। তার পর থেকেই উত্তপ্ত ভূ-স্বর্গ। উপত্যকার দুই হাসপাতালে চিকিৎসা চলেছে প্রায় ১৫০ আহত কাশ্মীরির। যদিও কেন্দ্র বাস্তবের এই চিত্রকে অস্বীকার করে বারংবার বলে এসেছে শান্ত আছে কাশ্মীর। তবে তা একেবারেই নয়। কিছুদিন আগেই জানা গেছিল কাশ্মীরে গৃহ বন্দী হয়ে আছে কিশোর-কিশোরীরা, পঠন পাঠন শিকেয়। এবার প্রকাশ্যে এল কাশ্মীরের বিখ্যাত ফল পট্টিতে মন্দার চিত্র।
প্রতি বছর এই সময়ে ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড় আর দরাদরিতে গমগম করে এই ফল-বাজার। এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম সেই বাজার এখন যেন ঝিমোচ্ছে। ক্রেতারা তো নেই, উপত্যকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্যবসা করতে আসা ফল বিক্রেতারাও যেন হারিয়ে গিয়েছেন। উত্তর কাশ্মীরের সোপোরের বিশাল ফল-পট্টি বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতির অপেক্ষায় যেন প্রহর গুনছে।
দীর্ঘ দিন এই ফল বাজারের সঙ্গে যুক্ত খাজ়ির মহম্মদ আলি জানালেন, দক্ষিণ কাশ্মীর বিশেষত শোপিয়ানের মতো এলাকা থেকে প্রচুর ফল আসত। বিধিনিষেধ আর নিরাপত্তা বাহিনীর কড়াকড়িতে ট্রাক সোপোরে পৌঁছতে পারছে না। ফল-পট্টির ব্যবসায়ী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নাজ়ির বাবা বলেন, ‘গত বছর বাংলাদেশ, ভুটান-সহ প্রায় ৯০টি এলাকা থেকে ক্রেতারা এসেছিলেন। কিন্তু এ বার কাশ্মীরের অন্য প্রান্ত থেকেই ব্যবসায়ীরা আসতে পারছেন না।’’ বাজারে একটি হেল্প ডেস্ক খোলা হলেও ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সেখানে কোনও সরকারি আধিকারিককে দেখা মেলেনি।
গত বছর সেপ্টেম্বরে এই বাজার থেকে এক কোটি ৯৪ লক্ষ বাক্স আপেল রফতানি হয়েছিল। এ বছর সেই সংখ্যাটা কোন তলানিতে ঠেকবে, তার হিসেব করতে গিয়েই শিউরে উঠছেন ব্যবসায়ীরা। এমনিতে, কাশ্মীর থেকে ২২ লক্ষ মেট্রিক টন আপেল রফতানি হয় প্রতি বছর। কম করে সাত লক্ষ মানুষ এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু এ বার অনেকেই ক্ষতির ভয়ে বাগান থেকে ফলই তুলছেন না। মূলত কিছু বিশেষ প্রজাতির আপেল এবং ন্যাশপাতি। যা দ্রুত পচনশীল। এক সময় যে ফল-পট্টি থেকে প্রতিদিন সারি সারি ট্রাক বার হত, এখন সেখানে একটা-দু’টো ট্রাকের আনাগোনা। প্রায় জনশূন্য বাজারে ঘোরাফেরা করছে কয়েকটা কুকুর।