লোকসভা ভোট চলাকালীন অমিত শাহের রোড শোয়ের দিন বাংলা নবজাগরণের পথিকৃত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙেছিল বিজেপির গুণ্ডাবাহিনী। যা নিয়ে শুধু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই নয়, সোচ্চার হয়েছিল বাংলার প্রায় প্রতিটা মানুষই। সেই মূর্তি ভাঙার স্মৃতিকে মাথায় রেখেই রাজ্য জুড়ে পালিত হতে চলেছে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের দ্বিশত জন্মবার্ষিকী। এই উপলক্ষে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে কবি শঙ্খ ঘোষ-সহ বিশিষ্টজনেরা মন্তব্য করেন, শুধু মূর্তিই নয়, তাঁর ভাবমূর্তিও আজ আক্রান্ত। সর্বগ্রাসী আক্রমণের বিরুদ্ধে সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই তাই তাঁরা বিদ্যাসাগরের চেতনাকে সকলের কাছে পৌঁছে দিতে চান।
প্রসঙ্গত, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর দ্বিশত জন্মবার্ষিকী উদযাপন কমিটির তরফে আয়োজন করা হয়েছে বছরভর নানা অনুষ্ঠানের। এই উপলক্ষে শুক্রবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলনে মিলিত হয়েছিলেন কমিটির সভাপতি কবি শঙ্খ ঘোষ, সম্পাদক আনন্দদেব মুখোপাধ্যায়, অমিয় সামন্ত, শ্যামল সেনগুপ্ত, অনুপ সরকার প্রমুখ। আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর বিদ্যাসাগরের ২০০তম জন্মদিনে ধর্মতলায় রাষ্ট্রগুরু সুরেন্দ্রনাথ পার্কে বিদ্যাসাগরের মূর্তিতে মাল্যদান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উৎসবের সূচনা হবে। বিকেল তিনটেয় থাকছে নাগরিক শোভাযাত্রা। সন্ধ্যায় মহাজাতি সদনে হবে আলোচনাসভা।
গতকাল ফের বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার নিন্দা করেন শঙ্খবাবু। গেরুয়া তান্ডবে মূর্তি ভাঙা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘অত্যন্ত নিন্দনীয়। নিন্দার ভাষা নেই। কী বলবেন! কেন এই মূর্তি ভাঙা হচ্ছে? চেতনার উদয় হোক, এটাই চাইব।’ বিদ্যাসাগরের শিক্ষা-ভাবনা, বাংলা ভাষার ক্ষেত্রে তাঁর অনন্য ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন। সেইসঙ্গে বর্তমান সামাজিক অবক্ষয়ের কথা উল্লেখ করে বিদ্যাসাগরের চেতনাকে সর্বত্র পৌঁছে দেওয়ার ওপরও গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি। আর কমিটির সম্পাদক আনন্দদেব মুখোপাধ্যায় জানান, রাজ্য সরকারের কাছ থেকে সব রকম সহযোগিতা তাঁরা পাচ্ছেন।