গ্রেফতারে ঢিলেমি করছে পুলিশ প্রশাসন। ধর্ষণকাণ্ডে অভিযুক্ত বিজেপি নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্বামী চিন্ময়ানন্দকে বাঁচাতেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে দেরি করছে পুলিশ। এই অভিযোগ করে বুধবার নিজেকে জীবন্ত জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন উত্তরপ্রদেশের বছর তেইশের সেই নিগৃহীতা। তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনেন আইনের ওই ছাত্রী। তারপরেই শুক্রবার উত্তরপ্রদেশের সাহারনপুরের আশ্রম থেকে চিন্ময়ানন্দকে গ্রেফতার করেন বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)-এর আধিকারিকেরা। ওদিনই চিন্মায়নন্দকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধ ধর্ষণের কোনও মামলাই দেয়নি পুলিশ। বরং ওই ছাত্রীর বিরুদ্ধেই তোলাবাজির অভিযোগ এনেছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, উত্তরপ্রদেশের ওই আইন কলেজের ছাত্রী ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের অভিযোগ এনেছেন চিন্ময়ানন্দের বিরুদ্ধে। ২৩ বছরের ওই তরুণীর অভিযোগ, গত এক বছর ধরে তাঁকে ধর্ষণ ও শারীরিক নির্যাতন করেছেন চিন্ময়ানন্দ। গত ২৩ অগস্ট ফেসবুকে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে তাতে প্রথমে চিন্ময়ানন্দের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ করেন তিনি। পরের দিন থেকে তাঁর খোঁজ না মেলায় ওই তরুণীর পরিবার পুলিশের দ্বারস্থ হয়। এর পর রাজস্থানের জয়পুরে ওই তরুণীর খোঁজ মেলে। সে সময় তাঁকে আদালতে হাজির করানো হয়। চিন্ময়ানন্দের ভয়েই তিনি বন্ধুদের সঙ্গে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন বলে দাবি করেন ওই তরুণী। পরে তিনি ধর্ষণের অভিযোগও করেন।
শুধু তাই নয়। এর সমর্থনে একটি ভিডিও ফুটেজও তিনি পুলিসের কাছে জমা দেন। তাঁর অভিযোগ, তাঁর স্নানের একটি ভিডিও দেখিয়ে তাঁকে টানা এক বছর যৌন নির্যাতন করেন চিন্ময়ানন্দ। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে একটি সিট গঠন করার নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। তবে এখনও প্রবীণ ওই বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণের কোনও মামলা করেনি পুলিশ। রাজ্যের পুলিশ প্রধান ও পি সিং সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, ‘চিন্ময়ানন্দকে ধর্ষণ সম্পর্কিত একটি অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে।’ পরে জানা যায় পুলিশ ৩৭৬ ধারায় ধর্ষণের অভিযোগ আনেনি বরং অভিযোগ আনা হয়েছে ৩৭৬সি ধারায়। এই ধারায় অভিযোগ প্রমাণিত হলে ৫-১০ বছর জেল হতে পারে।
অন্যদিকে, অভিযাগকারী তরুণীর বিরুদ্ধেই তোলাবাজির অভিযোগ এনেছে পুলিশ। তোলাবাজির অভিযোগে ইতিমধ্যেই তাঁর পরিচিত ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশের দাবি তোলাবাজির সঙ্গে জড়িত রয়েছেন ওই তরুণীও। এরপরই মুখ খুলে ওই নিগৃহীতা তরুণী সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, চিন্ময়ানন্দ কীভাবে আমরা ওপরে যৌন নির্যাতন করেছে তা বিস্তারিত পুলিশকে বলেছিলাম। কিন্তু এর পরেও চিন্মায়ানন্দের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়নি। উল্টে আমার বিরুদ্ধেই অভিযোগ আনা হয়েছে। তোলাবাজির সঙ্গে আমার কোনও যোগাযোগই নেই। বুঝতে পারছি না এর পেছনে চিন্ময়ানন্দের কী অভিসন্ধি রয়েছে।