শনিবার ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়েছে সৌদি আরবের তেল উত্তোলনকারী সংস্থা আরামকো। তার ধাক্কা গিয়ে লেগেছে বিশ্ব বাজারেও। এর জেরে পরপর দু’দিন বড়সড় ধস শেয়ার বাজারে। সোমবারের ধাক্কাটা ছিল সামান্য। কিন্তু, মঙ্গলবার বড়সড় ধাক্কা খেল শেয়ার বাজার। এক ধাক্কায় সেনসেক্স নেমে গেল প্রায় ৭০০ পয়েন্ট। একই সঙ্গে বড়সড় পতন ন্যাশন্যাল স্টক এক্সচেঞ্জের নিফটির সূচকেও। আজ ফের ধস নামল শেয়ার বাজারে। বৃহস্পতিবার বাজার খুলতেই ২৫০ পয়েন্ট পড়ল সেনসেক্স। নিম্নমুখী গতি নিফটিরও। বিদেশি বিনোযোগকারীদের অনীহা ও বিশ্ববাজের তেলের মূল্যবৃদ্ধির জেরে মেঘ জমেছে দালাল স্ট্রিটে।
আজ বাজার খুলতেই ২৫০ পয়েন্ট পড়ে সেনসেক্স দাঁড়িয়েছে ৩৬, ৩১২ পয়েন্টে। পাশাপাশি নিফটি ১০, ৮০০ পয়েন্টের নিচে নেমে গিয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, শেয়ার বাজের ধসের নেপথ্যে রয়েছে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের মূল্যবৃদ্ধি ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের অনীহা। দেশের অর্থনীতিতে চলা ডামাডোল ও আর্থিক মন্দার আগাম সতর্কতায় বিনিয়োগ করতে চাইছেন না বিদেশি লগ্নিকারীরা। একইসঙ্গে সমস্যা আরও বাড়িয়ে নিজেদের ভারতীয় ইকুয়িটি বেঁচে দিচ্ছেন তাঁর। গতকাল, অর্থাৎ বুধবার প্রায় ৯৫৯ কোটি টাকা মূল্যের ভারতীয় কোম্পানিগুলির শেয়ার বিক্র করে দিয়েছেন বিদেশি লগ্নিকারীরা।
শেয়ার বাজারে চলা ডামাডোলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া, আইসিআইসিআই ও ইয়েস ব্যাংক। এছাড়াও ধাক্কা খেছে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা টিসিএস, টেক মহিন্দ্রা ও এইচসিএল-য়ের শেয়ারও। মোতিলাল ওসওয়াল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস-এর শীর্ষ কর্তা বলেন, মধ্যেপ্রাচ্যে চলা চাপানউতোরের প্রভাব পড়বে ভারতীয় শেয়ার বাজারে। ফলে আগামী দিনে আন্তর্জাতিক মঞ্চে হওয়া ঘটনাচক্রের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।
ভারতে বিদেশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা অনেক শেয়ার বেচে দিয়েছেন। ফলে সাধারণভাবে অন্যান্য বিনিয়োগকারীর মধ্যেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ন্যাশনাল সিকিউরিটিজ ডিপোজিটরি থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, চলতি মাসে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ২৪২৮ কোটি টাকার শেয়ার বেচে দিয়েছেন।
গতকালও বাজার খোলার পর থেকেই দ্রুতহারে কমতে থাকে অটোমোবাইল সেক্টরের সংস্থাগুলির শেয়ার। একই সঙ্গে পতন হয় নিফটির সূচকেরও । বাজার খুলতেই সেনসেক্স নেমে যায় ৩৭০ পয়েন্ট। কিছুক্ষণের মধ্যেই কমতে কমতে তা ৭০০ পয়েন্ট নেমে যায়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বিএসই সেনসেক্স দাঁড়িয়ে আছে ৩৬ হাজার ৪২৫ পয়েন্টে। নিফটি প্রায় ৫০ পয়েন্ট নেমে দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৮০০ পয়েন্টের কাছাকাছি। একসময় নিফটি ৮৩ পয়েন্ট নেমে গিয়েছিল। এদিন অটোমোবাইল সেক্টরের পাশাপাশি ব্যাংকিং সেক্টরের শেয়ারেও ধস নেমেছে। অ্যাক্সিস ব্যাংক, এইচডিএফসি ব্যাংক, আইসিআইসিআই ব্যাংকের শেয়ারে রেকর্ড পতন হয়েছে। পতন হচ্ছে রিলায়েন্স, লার্সন অ্যান্ড টার্বোর মতো সংস্থার শেয়ারেও। বিশ্বের সর্ববৃহৎ তেল উৎপাদন কোম্পানির দুটি কারখানায় বিস্ফোরণের জেরে ক্রমেই বাড়ছে জ্বালানি তেলের দাম।