বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে মোদী সরকারের বাজেটে যেমন তেমন কোনও উদ্যোগ চোখে পড়েনি, তেমন চাহিদার মানোন্নয়নেও কোনও ইতিবাচক পদক্ষেপ নিতে পারেনি কেন্দ্র। আর এই দুই কারণেই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে ভারতের শিল্প সংস্থাগুলোকে। গাড়ি শিল্প থেকে বিস্কুট- সর্বত্রই বাজারে চাহিদা বাড়ন্ত। বিক্রি না হওয়ায় বন্ধ করতে হচ্ছে উৎপাদন। যার ফলে চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধি নেমে গেছে ৫ শতাংশে। কিন্তু অর্থনীতির বিগড়োনো ইঞ্জিন মেরামতির চেষ্টা করা তো দূর, বরং সাধারণ মানুষের কষ্টের সঞ্চয় নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে কেন্দ্র। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এবং স্টেট ব্যাঙ্কের গবেষণা শাখার সম্প্রতি প্রকাশিত দুই রিপোর্টকে হাতিয়ার করে এবার মোদী সরকারের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলল কংগ্রেস।
বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে কংগ্রেস নেতা তথা মুখপাত্র অজয় মাকেনের অভিযোগ, ১৯৫৬ সালে তৈরির পর থেকে ২০১৪ পর্যন্ত প্রায় ছয় দশকে বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক, সংস্থা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ঢালা হয়েছে জীবন বিমা নিগমের (এলআইসি) মোট ১১.৯৪ লক্ষ কোটি টাকা। সেখানে ২০১৯ সালে তা বেড়ে পৌঁছেছে ২২.৬৪ লক্ষ কোটিতে। অর্থাৎ, মাত্র পাঁচ বছরে তা বেড়েছে ১০.৭ লক্ষ কোটি টাকা। এবং সমস্যা হল, কোন ধরনের সংস্থায় তা ঢালা হচ্ছে, যথেষ্ট সংশয় রয়েছে তাকে ঘিরে। কারণ, গত পাঁচ বছরে সেনসেক্স যেখানে মোট ৭৩ শতাংশ উঠেছে, সেখানে এলআইসি-র টাকা ঢালা সংস্থাগুলির শেয়ার দর বেড়েছে মোটে ২০ শতাংশ।
তাঁর অভিযোগ, লগ্নীর জন্য ভুল সংস্থা বাছাইয়ের হাতে গরম উদাহরণ আইডিবিআই ব্যাঙ্ক। সেখানে ২১ হাজার কোটি টাকা ঢেলে এলআইসি নিজেদের অংশীদারি ৫১ শতাংশে নিয়ে গেলেও, ওই অঙ্ক খেয়ে গিয়েছে অনুৎপাদক সম্পদ। তার পরেও এ মাসে ওই ব্যাঙ্কে ফের ৯,৩০০ কোটি ঢালার কথা বলেছে কেন্দ্র। যার মধ্যে ৪,০০০ কোটিরও বেশি টাকার উৎস এলআইসি। মাকেনের দাবি, এলআইসিতে শুধু ব্যক্তিগত পলিসি হোল্ডারের সংখ্যা ২৮ কোটির বেশি। কর্মী ১.১২ লক্ষ। ১০.৭২ লক্ষ এজেন্ট। প্রায় সমস্ত সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের সঞ্চয়ের একটি অংশ অন্তত গচ্ছিত রয়েছে এলআইসিতে। এত গুরুত্বপূর্ণ একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ভিত এ ভাবে দুর্বল করা হবে কেন, সেই প্রশ্নই এবার তুললেন মাকেন।