তিনি অনুপ্রেরণার মানুষ। বহু কঠিন সময় পেরিয়ে আজ তিনি নিজের একটা জায়গা করেছেন ইন্ডাস্ট্রিতে। শুধু কথা বলা নয়, সেই কথা বলে, খুবই দক্ষতার সঙ্গে মানুষকে হাসাতেও পারেন। তাঁর শব্দেরা বহু সময়ে বহু মানুষের বাঁচার সম্বল হয়েছে। তাঁর অনুপ্রেরণায় বহু মানুষ ঘুরে দাঁড়িয়েছেন জীবনে। তার জীবনটা শুরু হয়েছিল বড্ড সাদামাটায়। লন্ড্রীর জামা মোড়ানো কাগজের বিজ্ঞাপণ দেখে প্রথম ইন্টারভিউ দিতে যাওয়া মানুষটার নাম মীর৷ মীর আফসার আলি। রেডিও জকি থেকে সঞ্চালক, অভিনেতা থেকে গায়ক। বহু প্রতিভায় তিনি বিকশিত৷ কিন্তু সেই মানুষটিই নাকি সকলের অলক্ষে নিজেকে শেষ করে দিতে চেয়েছিলেন! তা-ও আবার চার বার, গত দু’বছরের মধ্যে!
এই মুহূর্তে বাংলা গণমাধ্যম ও বিনোদনের জগতের এক উজ্জ্বলতম নাম মীর! তাঁর এই স্বীকারোক্তির পরেই ঝড় উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। দিন কয়েক আগেই ছিল আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস। সকাল থেকেই নির্দিষ্ট রেডিও স্টেশনে আরজে হিসেবে কথা বলছিলেন মীর। বাজাচ্ছিলেন গান। এমন সময়ে, আচমকাই অন এয়ার শেয়ার করেন, নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা। অন এয়ার যখন মীর এই কথা গুলো বলছিলেন, তখন তাঁর শ্রোতা-দর্শক-অনুগামীদের কাছে যেন মুহূর্তের জন্য থমকে গিয়েছিল সমস্তটা।
২০১৭ থেকে ২০১৯ অবধি, চার বার আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছেন তিনি। শেষ বার নিজের বাড়িতে, ৮৭টি ঘুমের ওষুধ খেয়ে। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় অন্যান্য বারের মতোই। সেই বার হয়তো আর ফেরা হতো না, চিকিৎসকদের আপ্রাণ চেষ্টা তাঁকে ফিরিয়ে আনে।
একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পরে মীর জানিয়েছেন, সব পাওয়ার পরেও, অদ্ভুত এক চাপ কাজ করে অনেক সময়ে। মানুষের প্রত্যাশার চাপ। নিজের সেরাটা উপস্থাপন করার চাপ। এই চাপই এক সময়ে বাকি দুনিয়া থেকে মানুষকে বিচ্ছিন্ন করে দেয় বলে জানান তিনি। তাই একটা বারের জন্যও মানুষ নিজেকে আটকাতে পারে না।
মীর জানান, এই রকম অনুভূতি জন্মালে কাছের মানুষকে এই চিন্তার কথা বলে দেওয়া জরুরি। কাছের মানুষকে কাছে না পেলে তাঁকে ফোন করে জানানো জরুরি। এই স্বীকারোক্তির পরে তাঁকে কুর্নিশ জানাচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া। অনেকেই বলছেন, খ্যাতির আড়ালে হতাশা অনেকেরই থাকে। কিন্তু তা এমন উন্মুক্ত করে মেলে ধরতে সকলে পারে না।