বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে মোদী সরকারের বাজেটে যেমন তেমন কোনও উদ্যোগ চোখে পড়েনি, তেমন চাহিদার মানোন্নয়নেও কোনও ইতিবাচক পদক্ষেপ নিতে পারেনি কেন্দ্র। এই দুই কারণেই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে ভারতের শিল্প সংস্থাগুলোকে। গাড়ি শিল্প থেকে বিস্কুট-সর্বত্রই বাজারে চাহিদা বাড়ন্ত। বিক্রি না হওয়ায় বন্ধ করতে হচ্ছে উৎপাদন। বস্ত্র এবং নির্মাণ শিল্পের অবস্থাও তথৈবচ। এ সবের ফলে চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধিও নেমে গেছে ৫ শতাংশে। এই অবস্থায় শিল্পকে চাঙ্গা করতে সম্প্রতি একাধিক পদক্ষেপ ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। এরই মধ্যে গত সপ্তাহে প্রকাশিত হয়েছে কলকারখানায় উৎপাদন বৃদ্ধির পরিসংখ্যান।
তাতে দেখা গেছে, জুনের (১.২ শতাংশ) তুলনায় জুলাইয়ে উৎপাদন বেড়েছে অনেকটাই (৪.৩ শতাংশ)। যদিও এই বৃদ্ধি আগের বছরের জুলাইয়ের (৬.৫ শতাংশ) তুলনায় কম। আসলে বিভিন্ন পণ্যের চাহিদার পতনে উৎপাদন ছাঁটাই করতে বাধ্য হচ্ছে একাধিক শিল্প। এই পরিস্থিতিতে অনেকেই মনে করছেন, অক্টোবরে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের পরবর্তী ঋণনীতিতে আরও এক দফা সুদ ছাঁটাই অবশ্যম্ভাবী। চাহিদা বৃদ্ধির তাগিদে ব্যাঙ্কের সুদ কমানো ও বাজারে নগদের জোগান বাড়াতেই তা করা হতে পারে। তাছাড়া আগস্টে খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হার ছিল ৩.২১ শতাংশ। যা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের লক্ষ্যমাত্রার অনেকটাই নীচে। ফলে সুদ কমানোর অনুকূল পরিস্থিতি রয়েছে।
গত চার ঋণনীতিতে ১১০ বেসিস পয়েন্ট সুদ কমিয়েছে শীর্ষ ব্যাঙ্ক। প্রথা ভেঙে আগের দফায় তা কমানো হয়েছিল ৩৫ বেসিস পয়েন্ট। অনেকের অনুমান, এই দফায় আরও ৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক রেপো রেট ছাঁটতে পারে ৪০ বেসিস পয়েন্ট। ঋণে সুদ কমানো হলে তা কমবে জমাতেও। এরই মধ্যে পরপর দু’বার জমায় সুদ ছাঁটাই করেছে স্টেট ব্যাঙ্ক। সুদ কমার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে ক্ষুদ্র সঞ্চয় প্রকল্পগুলিতেও। ১০ বছর মেয়াদি সরকারি বন্ডের ইল্ড বেশ নীচের দিকে (৬.৬৩ শতাংশ) থাকায় অক্টোবর থেকে সুদ কমার সম্ভাবনা থাকবে পিপিএফ, এনএসসি, সিনিয়র সিটিজেন্স সেভিংস স্কিম, ডাকঘর মাসিক আয়ের মতো প্রকল্পেও।