দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে দিন কয়েক আগেই আসামে প্রকাশিত হয়েছে জাতীয় নাগরিকপঞ্জী বা এনআরসি-র চূড়ান্ত তালিকা। যার ফলে ‘নিজভূমে পরবাসী’ হতে হয়েছে ১৯ লক্ষ ৬ হাজার ৬৫৭ জনকে। তাই বাংলায় জাতীয় নাগরিকপঞ্জীকরণ নিয়ে কেন্দ্রের শাসক দলের ‘অতিসক্রিয়তাকে’ চ্যালেঞ্জ জানাতে এবার পথে নামতে চলেছেন স্বয়ং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এনআরসি রোখার দাবিতে জনমত গঠনে আগামী বৃহস্পতিবার উত্তর কলকাতার চিড়িয়ামোড় থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত মিছিল করবেন তিনি। কিন্তু এরই মধ্যে শহরে এসে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি ফের স্পষ্ট করে দিলেন, বাংলায় নাগরিকপঞ্জী করার বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
প্রসঙ্গত, মোদী সরকারের ১০০ দিন উপলক্ষে মঙ্গলবার কলকাতায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন স্মৃতি। তুলে ধরেন ১০০ দিনে মোদী সরকারের সাফল্যের খতিয়ান। কাশ্মীরে ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপ থেকে নাগরিকপঞ্জী— সবই সরকারের সাফল্য হিসেবে ব্যাখ্যা করেন স্মৃতি। জাতীয় নাগরিকপঞ্জীর প্রসঙ্গেই উঠে আসে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতার প্রসঙ্গ। স্মৃতির বক্তব্য, এক সময় ভুয়ো ভোটার আটকাতে সচিত্র ভোটার কার্ডের পক্ষে সওয়াল করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এটা মমতার দ্বিচারিতা। কিন্তু সচিত্র ভোটার কার্ডের আন্দোলনের সঙ্গে নাগরিক পঞ্জির কী সম্পর্ক? প্রশ্ন এড়িয়ে স্মৃতির জবাব, ‘অনুপ্রবেশকারীদের আটকাতে বাংলা-সহ গোটা দেশেই নাগরিকপঞ্জী হবে। এটা বিজেপির ঘোষিত সিদ্ধান্ত।’
তবে স্মৃতির কথাকে উড়িয়ে দিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের পাল্টা কটাক্ষ, ‘সাস ভি কভি বহু থি। স্মৃতি আজ যা বলছেন, কাল নিজেই বলবেন তা ঠিক নয়। এ সব কথাকে বেশি গুরুত্ব না দেওয়াই ভাল।’ উল্লেখ্য, যে প্রক্রিয়ায় আসামে নাগরিকপঞ্জী হয়েছে, তার বিরোধিতা করে আগামী কাল, বৃহস্পতিবারই সিঁথি থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত মিছিল করবে তৃণমূল। মুখ্যমন্ত্রীরও সেই মিছিলেই যোগ দেওয়ার কথা। তবে দিন কয়েক ধরেই জাতীয় নাগরিকপঞ্জীর প্রতিবাদে রাজ্যের ব্লকে ব্লকে মিছিল এবং সভা করেছে তৃণমূল। বিধানসভাতেও নাগরিক পঞ্জীর বিরুদ্ধে বিরোধী বাম ও কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূল ঐক্যমত্য হয়ে প্রস্তাব পাশ করেছে।