শুক্রবার রাত ১.৫২ মিনিট ৫৪ সেকেন্ডে অবতরণের সময় নির্দিষ্ট ছিল৷ ঠিক তার আগেই সংকেত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ল্যান্ডার বিক্রমের সঙ্গে। ইসরোর বিজ্ঞানীরা-সহ মুষড়ে পড়ে গোটা দেশ। তবে গতকাল অরবিটার যে ছবি পাঠিয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে চাঁদের মাটিতেই রয়েছে বিক্রম। এই কথা সামনে আসতেই ফের উজ্জীবিত সকলে। বিক্রমের সঙ্গে ফের যোগাযোগ করার চেষ্টা চালাচ্ছে ইসরো।
ল্যান্ডার বিক্রম ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায়নি বরং অটুট আছে। সোমবার ইসরো সূত্রে এমনই খবর পাওয়া গিয়েছে। ইসরোর এক আধিকারিকের দাবি , ” চন্দ্রযানের অরবিটারে বসানো ক্যামেরা ল্যান্ডার বিক্রমের যে ছবি পাঠিয়েছে, সেই অনুযায়ী ল্যান্ডার বিক্রম তাঁর গন্তব্যস্থলের খুব কাছেই রয়েছে। এবং তা অটুট আছে, ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায়নি। এটা কোনও ঢালু জায়গায় অবস্থান করছে। অরবিটারের পাঠানো ছবি বলছে, প্রায় ঠিকঠাকই নেমে গিয়েছিল চন্দ্রযান ২-এর ল্যান্ডার বিক্রম। সামান্য এ দিক-ও দিক হওয়ায় সফল সফ্ট ল্যান্ডিং হয়নি তার। কিন্তু হার্ড ল্যান্ডিংয়ের কারণে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলেও, ল্যান্ডার বিক্রম এখনও আস্ত রয়েছে। ভাঙেনি। তবে এটি একটু কাত হয়ে যাওয়া অবস্থায় রয়েছে। সেই কারণেই পুনর্যোগাযোগ করা যাচ্ছে না কি না, তা অবশ্য নিশ্চিত করেননি ইসরো কর্তৃপক্ষ।
যদিও, বিক্রমের সঙ্গে যোগাযোগের এই রাস্তাটা সহজ নয়। ভেঙে টুকরো টুকরো না হয়ে গেলেও ল্যান্ডার বিক্রমের বেশ কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে অ্যান্টেনা এবং ক্যামেরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে যোগাযোগ সাধন কার্যত অসম্ভব বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানী মহলের একাংশ। ইসরোর এক আধিকারিক এ প্রসঙ্গে বলেন, “যদি ল্যান্ডারের সমস্ত যন্ত্রাংশ ঠিকঠাক না কাজ করে, তাহলে এটা (যোগাযোগ স্থাপন) খুব কঠিন। যদি, ওটার সফট ল্যান্ডিং হত, আর সব যন্ত্র ঠিকমতো কাজ করতো তাহলেই যোগাযোগ করা যেত। এই পরিস্থিতিতে আশা খুবই কম।”
এখন চেষ্টা একটাই, কী ভাবে বিক্রমের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া যোগাযোগ ফের চালু করা যায়। সেটা সম্ভব হলেই অনেকটাই কেটে যাবে দুশ্চিন্তা, চন্দ্রযান পাঠানোর উদ্দেশ্য সফল হওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে।চন্দ্রযান ২-এর সঙ্গে জড়িত এক আধিকারিক বলেন, “যদি না ল্যান্ডার বিক্রমের সমস্তটা অক্ষত থাকে, তা হলে নতুন করে যোগাযোগ স্থাপন করা খুব কঠিন হবে। সুযোগ কমই আছে বলা যায়। সফ্ট ল্যান্ডিং ঠিকঠাক হলে বিক্রম অক্ষত থাকত। সেটা হয়নি বলেই দুশ্চিন্তা বেড়েছে। কিন্তু আজকের ছবি আবার অনেকটাই স্বস্তি দিয়েছে। বিক্রম গোটাই আছে, ভাঙেনি। এবার দেখা যাক, যোগাযোগ ফেরে কি না।”