এতদিন ঠিক এইভাবেই তাঁদের প্রিয় ক্লাবকে দেখতে চেয়েছিলেন সমর্থকরা। বাগানে আজ যেন ফুলের সমারোহ। মাঠ জুড়ে খালি পাসের বন্যা। বর্ষার কাদা মাঠেও মাটিতে বল রেখে খেলা। একের পর এক দুরন্ত মুভ তৈরি হল। চোখধাঁধানো গোল এল। ঘরের মাঠে জর্জ টেলিগ্রাফকে দুরমুশ করে লিগ তালিকায় ১ নম্বরে উঠে এল সবুজ-মেরুন ব্রিগেড।
ঘরোয়া লিগের প্রথম তিন ম্যাচে এক হার ও দুই ড্র-এর পরে আগের ম্যাচে কল্যাণীতে শঙ্করলাল চক্রবর্তীর ভবানীপুরের বিরুদ্ধে জয়ের পথে ফিরেছিল বাগান। কোচ ভিকুনা বলেছিলেন, সেই জয়ের ধারা বজায় রাখতে চান তিনি। অন্যদিকে জর্জ টেলিগ্রাফের কোচ রঞ্জন চক্রবর্তী ইস্টবেঙ্গলকে হারানোর পরে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, বাগান ডিফেন্সের দুর্বলতা কাজে লাগাবেন তিনি। কিন্তু রঞ্জনের আশায় এদিন যেন এক বালতি জল ঢেলে দিলেন ভিকুনা।
খেলা শুরুর প্রথম কয়েক সেকেন্ডেই একটা আক্রমণ তুলেছিল জর্জ। সেই ধাক্কা সামলে তারপরই খেলায় ফিরল মোহনবাগান। মাঝমাঠে খেলা তৈরি করতে শুরু করলেন বেইতিয়া। দুই প্রান্ত ধরে উঠতে থাকলেন চুলোভা ও গুরজিন্দর। মাঝেমধ্যে থ্রু বলেও সুযোগ তৈরি করতে থাকল বাগান। ১৫ মিনিটের মাথায় ডান প্রান্ত ধরে চুলোভার ক্রসে হেডে গোল করে গোলের মুখ খোলেন ভিপি সুহের। দু’মিনিট পরেই সহজ সুযোগ নষ্ট করেন নওদম্বা নওরেম। মাঝেমধ্যে প্রতিআক্রমণ করলেও সেরকম সুযোগ তৈরি করতে পারেননি জোয়েল সানডে, জাস্টিস মরগ্যানরা। ৩৪ মিনিটের মাথায় বাঁপ্রান্ত ধরে গুরজিন্দরের মাইনাস দারুণভাবে লাফিয়ে উঠে নিখুঁত হেডে বল জালে জড়িয়ে দিয়ে ব্যবধান বাড়ান চামোরো।
দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা আক্রমণাত্মক খেলা শুরু করে জর্জ টেলিগ্রাফ। কিন্তু গোলের মুখ খোলেনি। যত খেলা গড়াচ্ছিল, তত মাঠ ভারী হয়ে যাচ্ছিল। ফলে পাসিং ফুটবলের থেকে লং বলে খেলা হচ্ছিল বেশি। ৬১ মিনিটের মাথায় তন্ময়ের বাঁ’পায়ের শট ভালো বাঁচান দেবজিৎ মজুমদার। তারপরেই ডিফেন্সকে আরও জমাট করতে মার্টিনেজ পেরেজকে তুলে নিয়ে রক্ষণে মোরান্তেকে নামান কোচ ভিকুনা।
তারপরেই খেলার ছবি বদলায়। বাকি সময়টা খালি একের পর এক আক্রমণ করল সবুজ-মেরুন ব্রিগেড। নিজেদের দখলে বল নিয়ে খেলতে থাকে বাগান। ৭০ মিনিটের মাথায় ডান প্রান্তে চুলোভার উদ্দেশে বল বাড়ান বেইতিয়া। তারপর চুলোভা বক্সের মধ্যে ঢুকে মাইনাস রাখেন। বক্সের মধ্যে থেকে ডান পায়ের টোকায় বল জালে জড়িয়ে ব্যবধান বাড়ান নওদম্বা নওরেম।
৮৪ মিনিটের মাথায় নওরেমের ক্রসে মাথা ছুঁইয়ে দলের চার নম্বর গোল করেন ফ্রান গঞ্জালেজ। দু’মিনিট পরেই শুভ ঘোষ গোল করলেও তা অফসাইডের জন্য বাতিল হয়। নাহলে কিবু ভিকুনার দল ৫ গোলের মালা পড়াতেই পারতেন রঞ্জনের জর্জকে। শেষ পর্যন্ত ৪-০ গোলেই জর্জকে হারায় মোহনবাগান।