এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর থেকেই আসাম সীমানার বারবিশায় নিরাপত্তা অনেকটা বেড়েছে। নাগরিকপঞ্জিতে চূড়ান্ত তালিকায় নাম নেই আসামের বহু বাসিন্দার। এর ফলে রীতিমতো উদ্বেগে দিন কাটছে সেখানকার বাসিন্দাদের। ট্রাইবুনালে আবেদন করার জন্য ১২০ দিন সময় বেঁধে দিয়েছে আসামের বিজেপি সরকার। আর তাই নাম তোলার জন্য ছুটোছুটি শুরু করেছেন তাঁরা। যদিও এরপরেও দুশ্চিন্তা কাটছে না তাঁদের।
আর এর প্রভাব এসে পড়েছে এ রাজ্যের আসাম সীমানার বারবিশা, কামাখ্যাগুড়ি এবং জেলা শহর আলিপুরদুয়ারের বাজারগুলিতে। এনআরসি-র চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর সীমান্ত লাগোয়া এইসব এলাকায় লোকজনের আনাগোনা কমেছে। বিশেষ করে স্থানীয় বাজারগুলিতে। স্থানীয়রা বলছেন, আসলে অস্তিত্বের সঙ্কটে রয়েছেন ওঁরা। তাতেই আসা-যাওয়া কমেছে। যার ফলে কমেছে আসাম লাগোয়া আলিপুরদুয়ারের বাজারগুলির কেনাবেচা।
সামনে পুজো। এই সময়ে এমন হঠাৎ মন্দায় চিন্তিত ওই সব এলাকার ব্যবসায়ীরা। কারণ, আসামের লোকজনের উপরেই অনেক ক্ষেত্রে নির্ভরশীল এই বাজারগুলি। বারবিশা এবং কামাখ্যাগুড়ি এলাকার ব্যবসায়ীরা জানালেন, মাত্র ২০-৩০ মিনিটে আসামের সীমান্ত লাগোয়া বিভিন্ন গ্রাম থেকে বাসিন্দারা বারবিশা এবং কামাখ্যাগুড়ি বাজারে চলে আসতে পারেন। ব্যবসায়ীদের কথায়, আসামের লোকজনেরাই বলতে গেলে বাঁচিয়ে রেখেছেন এই বাজারগুলিকে। বারবিশা, কামাখ্যাগুড়িতে কেনাকাটা করেন তাঁরা। এমনকি, এখান থেকেই মালপত্র কিনে নিয়ে যান ব্যবসার স্বার্থেও। এনআরসি-র ধাক্কায় আপাতত সেসব লাটে উঠেছে।
এই ঘটনার পর প্রশাসনের কর্তারা জানান, আসাম থেকে এই রাজ্যে আসতে কাউকে বাধা দেওয়া হচ্ছে না। শুধু আসাম সীমানায় আগের থেকে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। তবে তাঁদের বারবিশা, কামাখ্যাগুড়ি বা আলিপুরদুয়ারে আসতে বাধা নেই। আশা করা যায়, সময়ের সাথে সাথেই পরিস্থিতি ঠিক হয়ে যাবে।
ব্যবসায়ীদের অনেকেই জানান, এখান থেকে মাছ-মাংস, আনাজপাতি, চাল-ডাল, কাপড়, মায় লোহা, সিমেন্টও কেনেন আসামের বহু ব্যবসায়ী। এবার তাঁদের আনাগোনা অনেকটাই কম। যার ফলে পুজোর মুখে উদ্বিগ্ন বারবিশা-কামাখ্যাগুড়ি এলাকার ব্যবসায়ীরা।