ভগবান পরাজিত হয়ে চোখের জলে প্যাভিলিয়নে ফিরছেন, সেই দৃশ্য সহ্য করতে পারেননি ভক্ত। এই তুমুল কষ্ট তাই বাঁধ ভাঙল। গতকাল ধোনি আউট হতেই হৃদরোগে প্রাণ হারালেন এক ব্যক্তি।এ এক আশ্চর্য সমাপতন।
বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের শুরুতেই উইকেট খুইয়ে বিপদসীমায় পৌঁছে গিয়েছিল ভারত। ধোনি-জাদেজা মাঠে নেমে প্রায় হেরে যাওয়া সেই ম্যাচ দুর্দান্ত লড়াই করে ধরাছোঁয়ার মধ্যে নিয়ে আসে। কিন্তু যখনই মনে হল ম্যাচ যেন হাতের মধ্যে, তখনই ছন্দপতন। জাদেজা-ধোনিরা আপ্রাণ চেষ্টা করেও পারলেন না। সেমিফাইনালে পৌঁছে দেশের এই হার মেনে নিতে পারলেন না খানাকুলের বাসিন্দা শ্রীকান্ত মাইতি। ধোনি আউট হওয়ার পরই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল ওই ব্যক্তির। মৃত ওই ব্যক্তির নাম শ্রীকান্ত মাইতি। বাড়ি খানাকুলে।
ভারত সেমিফাইনালে উঠতেই বিশ্বকাপ জয় নিশ্চিত ভেবে নিয়েছিলেন তিনি। বুধবার বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে বসেই খেলা দেখতে শুরু করেন শ্রীকান্ত। খেলার প্রথমার্ধের ফলাফলে কিছুটা ভেঙে পড়লেও ধোনি-জাদেজা মাঠে নামতেই জয়ের বিষয়ে আশাবাদী হন তিনি। কিন্তু আপ্রাণ চেষ্টা করেও সাফল্য পায়নি ভারত। আউট হয়ে যান মহেন্দ্র সিং ধোনি। বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যায় দেশ। আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়েন শ্রীকান্ত। আশঙ্কাজনক অবস্থায় পরিবারের সদস্যরা তাঁকে উদ্ধার করে খানাকুল গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান৷ চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। হাসপাতালের তরফে জানানো হয় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই মৃত্যু হয়েছে শ্রীকান্তর। পরিবারের কথায়, খেলার ফলাফলের জেরে এই ঘটনা। কয়েকদিন আগে বাংলাদেশ বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যেতেই আত্মঘাতী হয়েছিল ওই দেশের বাসিন্দা অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া শাকিব। এবার সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ভারতে।
বরাবরই ক্রিকেটপ্রেমী সিকন্দরপুরের বাসিন্দা শ্রীকান্ত মাইতি। সাধারণত কোনও ক্রিকেট ম্যাচই বাদ দেন না তিনি। সেরকমই শুরু থেকেই বিশ্বকাপে নজর ছিল তাঁর। শুরুর পর থেকেই কোনও খেলাই মিস করেননি। পেশায় সাইকেল গ্যারাজের মালিক শ্রীকান্তবাবু দোকানে বসে মোবাইলেই খেলা দেখতেন। দল জিতলেই আনন্দে মেতে উঠতেন। আর হারলেই মন খারাপ হত তাঁর। আর এবার মনখারাপে ডুবে গেলেন তাঁর গোটা পরিবার।