কাটমানি নিয়ে টানাপোড়েন লেগেই আছে রাজ্যজুড়ে। সেই ইস্যু নিয়ে বেশ কড়া হচ্ছে শাসক দল। পাশাপাশি দলীয় সদস্যরাও নিচ্ছে একাধিক পদক্ষেপ। পুরুলিয়ার ঝালদা পুরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর মহেন্দ্র রুংটা নিলেন এক অভিনব উদ্যোগ। সাধারণ মানুষের কাছে তিনি আর্জি জানালেন যাতে সরকারি প্রকল্পে কোনো রকম ভাবেই কেউ কাটমানি না দেন। মাইকিং করে সাধারণ মানুষদের জানালেন, সরকারি প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা পেতে কোনও কাটমানি দেবেন না৷
বুধবার সকাল থেকেই ঝালদা শহরের এক নম্বর ওয়ার্ডে মাইকিং হয়। ওই মাইকিংয়েই কাটমানি নিয়ে সাধারণ মানুষকে নির্দেশ দেন কাউন্সিলর মহেন্দ্র রুংটা৷ বলা হয়, ‘‘রাজ্য সরকারের ‘হাউস ফর অল’ প্রকল্পে যারা শেষ কিস্তির টাকা পাননি এবং চলতি অর্থবর্ষে প্রাপকদের কী অবস্থা, তা নিজ মুখে শুনবেন কাউন্সিলর। ২০১৯–২০২০ আর্থিক বছরে এই প্রকল্পে কাদের নাম নথিভুক্ত হবে, তা নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হবে।’’ স্থানীয় সূত্রে খবর, এদিন রাত আটটায় ঝালদার এক নম্বর ওয়ার্ডের কমিউনিটি হলে সাধারণ মানুষজনকে নিয়ে বৈঠকে বসবেন কাউন্সিলর৷ বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করবেন তিনি।
তাঁর এই অভিনব উদ্যোগ নিয়ে কাউন্সিলর জানান, “সরকারি প্রকল্পের সুযোগ–সুবিধা পেতে কোন কাটমানি দিতে হবে না। এটা প্রাপকদের অধিকার। মাইকিংয়ের পাশাপাশি সাধারণ মানুষজনকে নিয়ে বৈঠক করেও এই কথা জানাব। কিভাবে সরকারি প্রকল্পের সুবিধা মিলবে তা পরিষ্কার করে বলব। যাতে পুরসভায় প্রাপকরা কোনভাবেই দালালদের খপ্পরে না পড়েন। সেই চেষ্টা করব।” তৃণমূল কাউন্সিলরের এহেন বার্তায় খুশি এলাকাবাসী। ঝালদার পুরপ্রধান তথা ঝালদা শহর তৃণমূলের কার্যকরি সভাপতি প্রদীপ কর্মকার বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কাটমানি নিয়ে যে পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। কিন্তু এই বিষয়টিকে সামনে রেখে বিরোধীরা যেভাবে প্রচার করছেন, তার মোকাবিলাতেই এক নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের এই মাইকিং। এভাবেই আমরা বিরোধীদের জবাব দেব। এই পুরসভায় সমস্ত সরকারি প্রকল্প একেবারে বিধি মেনে স্বচ্ছতার সঙ্গে চলছে। কেউ কোনও আঙুল তুলতে পারবেন না।”
অন্যদিকে, কাটমানির অভিযোগ আটকাতে টেন্ডারেই ভরসা করছে পঞ্চায়েত দফতর। এবার থেকে সব কাজ করতে হবে টেন্ডার ডেকে। টেন্ডার ছাড়া কোনও কাজ করা যাবে না। এতদিন পঞ্চায়েত স্তরে ছোটোখাট কাজের ক্ষেত্রে টেন্ডার ছাড়াই কাজের বরাত দেওয়া হত। এইবার সেই নিয়মে পরিবর্তন করতে চলেছে রাজ্য সরকার। কোনোভাবেই কোনো অন্যায় যে সহ্য করা হবে না এমনই বার্তা দিয়েছিলেন দলনেত্রী। সেই বার্তাই সত্যি করতে রাজ্য সরকারের পাশাপাশি দলীয় নেতাকর্মীরাও উদ্যোগী হয়ে উঠেছেন।