সরকারি প্রকল্পে কাটমানি বা কমিশন খাওয়ার দিন যে শেষ, আগেই তা স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি, দুর্নীতি রুখতে তিনি গড়ে দিয়েছিলেন ‘মনিটরিং সেল অন প্রোগ্রাম ইমপ্লিমেন্টেশন অ্যান্ড গ্রিভ্যান্সেস’ অথবা ‘গ্রিভ্যান্স সেল’ও। এবার সেই সেলের মাথায় বসানো হল একজন আইএএস অফিসারকে। নবান্ন থেকে নির্দেশিকা জারি করে বলা হয়েছে, আইএএস বরুণ কুমার রায়কে সরকারি প্রকল্পে আর্থিক তছরুপ রুখতে এবং তা দেখভাল করতে নিয়োগ করা হল।
প্রসঙ্গত, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পঞ্চায়েত স্তরে পরিষেবা পেতে কোথাও কাটমানি, আবার কোথাও কমিশন দিতে হচ্ছে সাধারণ নাগরিকদের, এ হেন অভিযোগ বেশ কয়েকবার জমা পড়েছে নবান্নে। কন্যাশ্রী-রূপশ্রীর অনুদান, সবুজসাথী, স্বাস্থ্যসাথী, আবাস যোজনা, দু’টাকা কিলো দরে চাল, বিধবা ভাতা, এমনকী শেষকৃত্য সমব্যথী প্রকল্পের সুবিধা পেতেও কমিশন চাওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ আসছিল।
ভোট মরশুমে বিভিন্ন জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে গিয়েও বারবার এই বিষয়টি উত্থাপন করে দলের সমস্ত স্তরের জনপ্রতিনিধিদের সতর্ক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আর ভোটের ফলাফল বিশ্লেষণের পর তৃণমূল শিবির মনে করছে, কাটমানি এবং কমিশন খাওয়ার এ হেন কারবার লোকসভা নির্বাচনে জোড়াফুলের ভোটবাক্সে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। তাই ভোটের পরই কাটমানি এবং কমিশন নেওয়ার কারবার বন্ধে আরও কড়া পদক্ষেপ নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। আর এবার তাঁর নির্দেশেই নবান্ন আরও পদক্ষেপ করল।
উল্লেখ্য, প্রথম যখন এই সংক্রান্ত গ্রিভ্যান্স সেল চালু হয়, তখন এর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল কর্নেল দীপ্তাংশু চৌধুরীকে। আর তার পাশাপাশি, আইজি আইনশৃঙ্খলা জ্ঞানবন্ত সিংও সমস্ত জেলার পুলিশ সুপার ও পুলিশ কমিশনারদের নির্দেশ দেন, কাটমানি সংক্রান্ত অভিযোগ এলে তা গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। একই সঙ্গে সাধারণ মানুষকে বার্তা দেওয়া হয়, বিক্ষোভ না দেখিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান। কিন্তু এবার একজন আইএএস অফিসারকেই এই দায়িত্ব দেওয়া উচিৎ মনে করল প্রশাসন।