‘সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতার ইতিহাস আক্রান্ত হচ্ছে।’ শুক্রবার ২০১৮ সালের বার্ষিক আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা প্রতিবেদন প্রকাশ করে ঠিক এমনই অভিযোগই তুলেছে মার্কিন স্বরাষ্ট্র দফতর। যার পরই প্রবল অস্বস্তিতে পড়েছে মোদী সরকার।
ওই মার্কিন রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠের পার্টি বিজেপির কিছু বরিষ্ঠ আধিকারিক সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে উত্তেজক ভাষণ দিয়েছেন। গো-হত্যার গুজবকে কেন্দ্র করে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের দ্বারা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, বিশেষ করে মুসলিমদের ওপর আক্রমণের ঘটনা এ বছর ক্রমবর্ধমান।’
তবে এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই ‘এ ব্যাপারে বিদেশিদের বলার অধিকার নেই’ বলে বিতর্ক চাপা দেওয়ার চেষ্টা করল মোদী সরকার। শনিবার বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশ কুমারের সাফাই, ভারতীয় নাগরিকদের সাংবিধানিকভাবে সুরক্ষিত অধিকারের ব্যাপারে কোনও বিদেশি রাষ্ট্রের কথাকে গ্রহণযোগত্যতা দেওয়ার কারণ দেখছে না ভারত।
প্রসঙ্গত, ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে মার্কিন স্বরাষ্ট্র দফতরের প্রকাশিত ওই রিপোর্টে এ কথা বলা হয়েছে যে, ‘ভারতে উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা বছরভর সংখ্যালঘুদের ওপর হিংস্র আক্রমণ চালিয়েছে।’ তার প্রেক্ষিতে রবীশ কুমার বলেছেন, ‘ভারত নিজের ধর্ম নিরপেক্ষতা, সব থেকে বড় গণতন্ত্রের তকমা, ভিন্ন ভাষাভাষীর সমাজ, সহনশীলতা এবং গ্রহণ করার দীর্ঘদিনের অঙ্গীকার নিয়ে গর্বিত।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভারতীয় সংবিধান সংখ্যালঘু সমাজ-সহ সব নাগরিককে মৌলিক অধিকার দেয়। এটা জনবিদিত যে ভারত সেই গণতন্ত্র যেখানে সংবিধান ধর্মীয় স্বাধীনতাকে সুরক্ষা দেয়, যেখানে গণতান্ত্রিক সরকার এবং আইন সেই মৌলিক অধিকারকে আরও সুরক্ষিত করে এবং প্রসারিত করে।’
মার্কিন ওই রিপোর্টকে বিজেপিও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে একপেশে বলে উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘুমন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভি বলেছেন, ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা ভারতের মজ্জায় আছে। এজন্য কারও শংসাপত্রের দরকার নেই। ওই রিপোর্ট প্রকৃত সত্যর থেকে অনেক দূরে এবং কুসংস্কারাচ্ছন্ন। প্রত্যেক ধর্ম, বিশ্বাস এবং সংস্কারের মানুষ এখানে ধর্মীয় উৎসাহ নিয়ে স্বচ্ছন্দে বাঁচতে পারে।’ যদিও এরপরেও অস্বস্তি কমেনি মোদী অ্যাণ্ড কোম্পানী।